বৃহস্পতিবারের জঙ্গি হানার ঘটনার জেরে আবার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হল জম্মু এবং কাশ্মীরের একাংশে। হামলাকারী পাক জঙ্গিদের খোঁজে সেনা অভিযান চলার কারণেই পুঞ্চ এবং রাজৌরি জেলার সীমানায় মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। তবে এর নেপথ্যে ‘জনবিক্ষোভ’ কারণ বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রসঙ্গত, জম্মু ডিভিশনের পুঞ্চ এবং রাজৌরি জেলার সীমানায় সেনার দু’টি গাড়িতে বৃহস্পতিবারের ওই জঙ্গি হামলার ঘটনায় পাঁচ জওয়ান নিহত হয়েছেন। ঘটনার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে পাক সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী লস্কর-ই-তইবার শাখা সংগঠন ‘দ্য পিপলস অ্যান্টি-ফ্যাসিস্ট ফ্রন্ট’ (পিএএফএফ)।
বুধবার গভীর রাত থেকে ডেরা কি গলি-তে অভিযানে নামে সেনা। সেই অভিযানে অংশ নিতেই যাচ্ছিলেন রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের জওয়ানেরা। সুরনকোট থানার অধীন বাফলিয়াজ় থেকে রাজৌরির দিকে যাচ্ছিল সেনার গাড়ি দু’টি। বাফলিয়াজ় এবং ডেরা কি গলির মাঝের পাহাড়ঘেরা অঞ্চলে গভীর অরণ্য রয়েছে। তারই সুযোগ নেয় জঙ্গিরা। বিকেল পৌনে ৪টে নাগাদ টোপা পীর অঞ্চলের কাছে একটি সঙ্কীর্ণ পাহাড়ি বাঁকের মুখে সেনার জিপ এবং ট্রাকের উপরে হামলা চালানো হয়।
বাঁকের মুখে গাড়ির গতি কমতেই ধেয়ে আগে গুলি এবং গ্রেনেডের ঝাঁক। সেনা সূত্রের খবর, জঙ্গিরা হামলায় নিহত সেনাদের মুণ্ডচ্ছেদ করেছে। এই পরিস্থিতিতে সেনা, রাষ্ট্রীয় রাইফেলস, সিআরপিএফ এবং জম্মু ও কাশ্মীর সশস্ত্র পুলিশের যৌথ বাহিনী জঙ্গিদের খোঁজে ডেরা কি গলি ও বালফাইজ়ের মধ্যবর্তী পাহাড় এবং জঙ্গল ঘেরা এলাকায় চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে। অভিযানে যোগ দিয়েছে সেনার হেলিকপ্টারও। কিন্তু শুক্রবার দিনভর অভিযানেও সাফল্য মেলেনি।
তারই মধ্যে সেনা হেফাজতে দুই গ্রামবাসীর মৃত্যুর অভিযোগের জেরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে পুঞ্চ-রাজৌরিতে। বৃহস্পতিবারের হামলার পরে বলফাইজ়ের সাওয়ানি গ্রাম থেকে ৩৬ জন গ্রামবাসীকে আটক করেছিল সেনা। তাঁদের মধ্যে বছর তিরিশের রেয়াজ় আহমেদ ও বছর ছাব্বিশের শওকত হুসেনের সেনা হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। রেয়াজ় ও শওকতের দেহ নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় বলফাইজ়ের পুঞ্চ চক এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করেন গ্রামবাসীদের একাংশ। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়া ঠেকানোর উদ্দেশ্যেই ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে বলে অভিযোগ।