হায়দরাবাদের কাছে হারের পরেই সমালোচনার মুখে পড়লেন লখনউ সুপার জায়ান্টস দলের মালিক সঞ্জীব গোয়েন্কা। ম্যাচের পর প্রকাশ্যেই দলের অধিনায়ক কেএল রাহুলকে ভর্ৎসনা করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। হায়দরাবাদের কাছে এই ভাবে দলের আত্মসমর্পণ মেনে নিতে না পেরেই তিনি এমন কাজ করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে বিষয়টি ভাল ভাবে নেননি সমর্থক থেকে শুরু করে ধারাভাষ্যকারেরা।
বুধবার আইপিএলে খেলা ছিল হায়দরাবাদ এবং লখনউয়ের। সেই ম্যাচে আগে ব্যাট করে ১৬৫/৪ তোলে লখনউ। জবাবে ৯.৪ ওভারে কোনও উইকেট না হারিয়ে জয়ের রান তুলে নেয় হায়দরাবাদ। অভিষেক শর্মা এবং ট্রেভিস হেডের দাপটে জেতে তারা।
ম্যাচের পরেই সঞ্জীব নেমে আসেন মাঠে। বাউন্ডারির ধারে দাঁড়িয়ে রাহুলকে হাত নেড়ে নেড়ে অনেক কিছু বোঝাতে থাকেন। তাঁর আচরণ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল দলের এই হারে তিনি খুশি নন। কিছু কিছু ক্রিকেটারের দিকে হাত দেখিয়ে ইঙ্গিত করতে থাকেন সঞ্জীব। তাঁর গলার স্বরও যে বেশ উঁচু ছিল, সেটাও বোঝা গিয়েছে ভিডিয়ো দেখে।
সঞ্জীবের দাপটের সামনে রাহুল কিছু বলতেই পারেননি। তিনি চুপচাপ মাথা নীচু করে দাঁড়িয়েছিলেন। সঞ্জীবের কথা শুনছিলেন। পরে কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গারকেও বেশ কিছু কথা বলেন সঞ্জীব। সেই ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ামাত্রই সমালোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছে।
ভারতীয় দলের একজন ক্রিকেটারের প্রতি দলমালিকের এমন আচরণে খুশি হতে পারেননি সমর্থকেরা। তাঁদের দাবি, দলের হারে মালিকের রাগ হতেই পারে। সেটা তো সাজঘরে ফিরেও বোঝানো যেত। মাঠের মধ্যে সবার সামনে এ ভাবে রাহুলকে ‘অপমান’ করার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
কেউ কেউ এই ঘটনার সঙ্গে টেনে এনেছেন কেকেআর মালিক শাহরুখ খানের প্রসঙ্গ। তাঁরা জানিয়েছেন, রাজস্থানের কাছে ঘরের মাঠে ও ভাবে দলের হার স্টেডিয়ামে বসে দেখেছিলেন শাহরুখও। দল বা অধিনায়ককে বকাঝকার বদলে তিনি সাজঘরে গিয়ে প্রত্যেককে উৎসাহ দেন। দ্রুত হার ভুলে যেতে বলেন। সবাইকে গিয়ে জড়িয়ে ধরেন। কেকেআরের সাফল্যের পিছনে শাহরুখের এই অবদানের কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন অনেকে।
খুশি হননি ধারাভাষ্যকারেরাও। জিয়ো সিনেমার এক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, “রুদ্ধদ্বারেই এমন আলোচনা হওয়া উচিত ছিল। এখন স্টেডিয়ামে কত ক্যামেরা থাকে। ওরা কোনও কিছুই দেখাতে ছাড়ে না। আপনি জানেন যে রাহুলকে এখন সাংবাদিক বৈঠকে যেতে হবে এবং আরও অনেক কাজ করতে হবে। তখনই আপনি ওকে এ সব বোঝাতে বসলেন!”
আর এক বিশেষজ্ঞ স্কট স্টাইরিস বলেন, “আপনি নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছেন। এমনটা করা মোটেই উচিত হয়নি।”
সেই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে সঞ্জীবের হাত ছিল বলে মনে করেন অনেকেই। ক্রিকেটজীবনে ধোনিকে সেই প্রথম এবং এখনও পর্যন্ত শেষ বার অধিনায়কত্ব থেকে সরানো হয়েছিল। আবার চেন্নাইয়ের অধিনায়ক হিসাবে ফিরে ধোনি নিজের দক্ষতা বার বার প্রমাণ করে দিয়েছেন।