হিন্দু বিবাহ রীতি মানলে বিয়ের পরে মহিলাদের কপালে সিঁদুর পরানো হয়। তবে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা এবং তদপরবর্তী ভারতীয় সেনার পাল্টা অপারেশন সিঁদুরের পরে ‘সিঁদুর’ শব্দটি আর কেবল ধর্মীয় রীতিতে আটকে নেই। তার আলাদা ‘রাজনীতি’ও রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার, ৫ জুন, বিশ্ব পরিবেশ দিবসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর দিল্লির বাসভবন, ৭ লোক কল্যাণ মার্গ সংলগ্ন বাগানে একটি গাছ পুঁতলেন। যার নাম ‘সিঁদুর’!
ওই গাছের চারা রোপনের কথা জানিয়েছেন মোদী নিজেই। তিনি লিখেছেন, ‘‘আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবসে, সিঁদুর গাছ পোঁতার সৌভাগ্য হল আমার। এটি এ দেশের মহিলাদের শক্তি, শৌর্য্য এবং অনুপ্রেরণার প্রতীক হিসাবে থেকে যাবে।’’

সিঁদুর গুঁড়ো হিসাবে বাক্সে ভরে দোকান থেকে কিনেই পরেছেন অধিকাংশ ভারতীয় মহিলা। আধুনিকারা লিক্যুইড বা তরল সিঁদুরও কেনেন। কিন্তু সিঁদুর গাছেও ফলে? সেই উত্তর না দিলেও প্রধানমন্ত্রী মোদী জানিয়েছেন, গাছটি গুজরাতের কচ্ছের মহিলারা উপহার হিসাবে দিয়েছেন তাঁকে।

সিঁদুর গাছ কী?
সিঁদুর গাছ হল বিষুব অঞ্চলে ফলা এক ধরনের গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। যার ফলের দানার রং উজ্জ্বল লাল। ওই গাছের বৈজ্ঞানিক নাম বিক্সা ওরেলানা। ইংরেজিতে একে বলা হয় আন্নাত্তো। হিন্দিতে ওই গাছকে বলা হয় সিঁদুর গাছ।
নাম সিঁদুর কেন?
তার কারণ এই গাছের বীজ থেকে গাঢ় লাল সিঁদুরের রঙের এক ধরনের রকং তৈরি হয়। যা প্রাকৃতিক লাল রং এবং তা খাবারেও ব্যবহার করা হয়। ভারতে তো বটেই বিদেশেও।
কেমন দেখতে এই গাছ?
গাছের পাতার আকৃতি অনেকটা লম্বাটে পান পাতার মতো। উচ্চতা ৬-১০ ফুটের দৈর্ঘ্য ছাড়ায় না। আর এই গাছের ফুলের রং হয় সাদা এবং গোলাপি। ফল হয় লাল রঙের আর তার বীজ থেকেই তৈরি হয় প্রাকৃতিক লাল রং।

কী ভাবে রং তৈরি হয়?
ফল পেকে শুকিয়ে গেলে শুকনো বীজকে গুঁড়ো করে তার সঙ্গে জল বা তেল মিশিয়ে তৈরি হয় রং।
অর্থাৎ গাছের নাম সিঁদুর হলেও সিঁদুর গাছে ফলে না। চাইলে দেখতে ভাল লাগবে বলে বাড়ির বাগানে সিঁদুর গাছ বসাতেই পারেন। তবে তার জন্য বাড়তি যত্ন, সূর্যের তাপ এবং উষ্ণ আবহাওয়া প্রয়োজন হবে।