জলের তলায় আলু। দুশ্চিন্তায় ঘুম উড়েছে আলু চাষীদের। আলুর বন্ড নিয়ে হাহাকার আলু চাষীদের মধ্যে। অভিযোগ আলু চাষিরা মূলত বন্ড পাচ্ছেন না। বন্ড পাচ্ছেন একশ্রেণীর ব্যবসায়ীরা যাকে ঘিরে জেলা জুড়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন হিমঘরের সামনে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। প্রচুর হিমঘরের প্রয়োজন জানালেন, এগ্রি মার্কেটিং এর জেলা আধিকারিক সুব্রত দে।
আবহাওয়া দফতর আগেই জানিয়ে দিয়েছিল দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলা সহ কয়েকটি জেলায় ঝড়ো হাওয়া, বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা। এদিকে শুরু হয়েছে জেলা জুড়ে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি। বৃষ্টির ফলে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের পাহাড়পুর, বাহাদুর, বেলাকোবা, বেরুবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কিছু এলাকা সহ ধুপগুড়ি ও বানারহাট ব্লকের সাঁকোয়াঝোরা এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় আলু জলের তলায় চলে যায়। মাঠেই জলে ডুবে যায় আলু চাষীদের উৎপাদিত আলু।
স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা চিন্তায় ফেলে দিয়েছে আলু চাষীদের। আলুর ফলন বেশি অন্যদিকে আলুর সঠিক দাম পাচ্ছেন না কৃষকরা। পাশাপাশি হিমঘরগুলোতে আলুর বন্ডের কালোবাজারির অভিযোগ। এর উপরে খারাপ আবহাওয়ার কারণে বৃষ্টিপাতের জেরে জেলার আলু চাষীদের মাথায় হাত।
এখনও পর্যন্ত ৫০ শতাংশ আলু চাষী আলু তুলতে পারেননি জমি থেকে। তারই মধ্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। আর তাই ভরা কোটালে দুশ্চিন্তায় ঘুম উড়েছে আলু চাষীদের। বিশাল অংকের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন তাঁরা এমনটাই আশঙ্কা করছেন আলু চাষীরা।
জেলা কৃষি বিপনন দফতরের আধিকারিক সুব্রত দে জানান, ‘বর্তমানে জেলার বিভিন্ন হিমঘরগুলোতে লোডিং শুরু হয়েছে। জেলায় মোট ২৪টি হিমঘরে ৪ লক্ষ ১১ হাজার মেট্রিকটন ধারণ ক্ষমতা। জেলার আলুর প্রোডাকশন রয়েছে প্রায় ১৪ লক্ষ মেট্রিকটন। সেই নিরিখে ৩০ শতাংশ স্টোরেজ ক্যাপাসিটি। আরও প্রচুর হিমঘরের প্রয়োজন। সেদিকেও আমরা দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এবং বেসরকারি লগ্নিকারী যারা আছেন তাদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। যাতে আগামী বছর আরও বেশকিছু হিমঘর তৈরি করা যায়। আশা করি সমস্যা মিটে যাবে’।
জেলা পরিষদের সভাদিপতি উত্তরা বর্মন জানান, ‘আলুর দাম নেই এবার। আলু এবার বিক্রি করতে পারেনি চাষীরা। এর জন্য চাষী ভাইরা চাইচ্ছে আলু হিমঘরে রাখতে। যাতে খরচটাও উঠে আসে। এই মুহূর্তে আলু বিক্রি করলে চাষী ভাইদের খরচটাই উঠবে না। আমরাও চেষ্টা করছি পঞ্চায়েত প্রধান মারফত আলু চাষীরা যাতে বন্ড পায়। এবং কিছুটা হলেও সমস্যার সমাধান হয়’।