এতদিন বিশ্বের সবথেকে জনবহুল দেশ ছিল চিন। ২০২১ সাল অবধি সেটাই ধ্রুব সত্য ছিল। ধীরে ধীরে সেই চিত্রটা বদলাতে শুরু করেছে। অবশেষে চিনকে বিরাট টেক্কা ভারতের। ‘দ্য স্টেট অফ ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিপোর্ট’ অনুসারে চিনের জনসংখ্যাকে টেক্কা দিন ভারত। ১৯৫০ সাল থেকে ‘দ্য স্টেট অফ ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিপোর্ট’ অনুসারে এই প্রথমবারের মত ভারতের জনসংখ্যা চিনকে ছাড়িয়ে গেছে।
ভারতের জনসংখ্যা গত এক বছরে বেড়েছে ১.৫৬ শতাংশ। রাষ্ট্রসংঘের জনসংখ্যা রিপোর্ট অনুসারে ভারতের মোট জনসংখ্যা ছুঁয়েছে ১৪২.৮৬ কোটি, এর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি অর্থাত্ ৬৮ শতাংশের বয়স ১৫ থেকে ৬৪বছর। UNFPA এর স্টেট অফ ওয়ার্ল্ড পপুলেশন (SOWP) রিপোর্টের সর্বশেষ সংস্করণ অনুসারে দেশের বর্তমান জনসংখ্যা ১৪২ কোটি অতিক্রম করেছে। ১৯৫০ সাল থেকে ‘দ্য স্টেট অফ ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিপোর্ট’ অনুসারে এই প্রথমবারের মত ভারতের জনসংখ্যা চিনকে ছাড়িয়ে গেছে।
বুধবার প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে চিনের জনসংখ্যা ১৪২. ৫৭ কোটি। জনসংখ্যার নিরিখে চিন ভারতের থেকে পিছিয়ে রয়েছে। গত বছর দেশের মোট জনসংখ্যা ছিল ১৪০.৬ কোটি। সর্বশেষ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে ভারতীয় পুরুষের গড় আয়ু ৭১ বছর এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে তা ৭৪ বছর। UNFPA রিপোর্ট অনুসারে ভারতের জনসংখ্যার ২৫% ০-১৪ বছর বয়সী, ১৮% ১০-১৯ বছর বয়সী, ২৬% ১০-২৪ বছর বয়সী, ৬৮% ১৫-৬৪ বছর এবং ৭% ৬৫-এর উপরে।
UNFPA-এর তরফে আন্দ্রেয়া ওয়াজনার, বলেছেন, ‘ভারত শিক্ষা, জনস্বাস্থ্য, অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে প্রযুক্তিগত অগ্রগতির ক্ষেত্রেও নজির স্থাপন করেছে। সর্ববৃহত্ তরুণ প্রজন্মের দেশ হিসেবে ভারত উদ্ভাবন, নতুন চিন্তাভাবনা এবং দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের এক স্থায়ী উত্স হতে পারে’। UNFPA-এর তরফে বলা হয়েছে, ‘আমরা বলতে পারি চিনের জনসংখ্যা গত বছর শীর্ষে পৌঁছেছিল এবং তারপর থেকে তা হ্রাস পেতে শুরু করেছে এবং যখন ভারতের জনসংখ্যা ১৯৮০ সাল থেকে দ্রুত হারে বাড়ছে’।
বুধবার প্রকাশিত UNFPA-এর ‘দ্য স্টেট অফ ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিপোর্ট, ২০২৩’ অনুসারে ভারতের জনসংখ্যা ১৪২৮.৬ মিলিয়ন এবং চিনের জনসংখ্যা ১৪২৫.৭ মিলিয়ন, পার্থক্য ২.৯ মিলিয়ন। গত তিন দশকে ভারতের শিশুমৃত্যুর হার ৭০ শতাংশ কমে গেলেও আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে তা এখনও অনেকটাই বেশি। সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুসারে দেশে এই মুহূর্তে ‘ফার্টিলিটি রেট’ ২.০ শতাংশ।
রাষ্ট্রসংঘের হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বের জনসংখ্যা ২০৩০ সালের মধ্যে ৮৫০ কোটি হবে এবং ২০৫০ সাল পর্যন্ত তা পৌঁছবে ৯৭০ কোটি জনসংখ্যায়। তার মূল কারণ মানুষের আয়ু বাড়ছে, এবং মাতৃত্ব ও শিশুমৃত্যুর হার অনেকটাই কমেছে।’ রাষ্ট্র সংঘের রিপোর্ট অনুসারে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের জনসংখ্যার অর্ধেক বৃদ্ধি হবে আটটি দেশে। ভারত, পাকিস্তান, নাইজেরিয়া, ফিলিপিন্স, তানজানিয়া, ইথিওপিয়া, মিশর এবং গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গোর।