লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার দু’টি কম্পিউটার বাজেয়াপ্ত করল কলকাতা পুলিশ। শুক্রবার ওই সংস্থার এক কর্মী লালবাজারে ইডির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তার পর সংস্থার কম্পিউটারগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসের কর্মী চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ ছিল, তাঁদের সংস্থায় তল্লাশি চালিয়ে ইডি আধিকারিকেরা চলে যাওয়ার পর দেখা গিয়েছে, কম্পিউটারে অচেনা ফাইল ডাউনলোড করা। ১৬টি মাইক্রোসফ্ট এক্সেল ফাইল ডাউনলোড করা হয়েছে বলে অভিযোগ। চন্দন পুলিশকে জানান, এই ফাইলগুলি তাঁদের সংস্থার কোনও কর্মী ডাউনলোড করেননি। ইডি আধিকারিকেরা করেছেন।
এই মর্মে লালবাজারে অভিযোগ জানানো হলে শুক্রবারই লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসের অফিসে যান তদন্তকারী আধিকারিকেরা। প্রাথমিক ভাবে তদন্ত করার পর সংস্থার দু’টি কম্পিউটার তাঁরা সঙ্গে নিয়ে আসেন।
গত সোমবার লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থায় প্রায় ১৮ ঘণ্টা তল্লাশি চালায় ইডি। ইডি সূত্রে খবর, এই সংস্থায় উচ্চ পদে কাজ করতেন নিয়োগ মামলায় ধৃত ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। তল্লাশির পর সংস্থার কর্মী চন্দনের মোবাইলও বাজেয়াপ্ত করা হয়। লালবাজারে চন্দন দাবি করেছেন, গত ২১ অগস্ট তল্লাশির সময় কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিলেন ইডির আধিকারিকেরা। সে সময়ই কিছু ফাইল তাঁরা ডাউনলোড করে নেন বলে অনুমান তাঁর।
সোমবার সকালে ইডির তিনটি দল সুজয়কৃষ্ণের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে, এমন পৃথক তিনটি জায়গায় তল্লাশি শুরু করে। আলিপুরে লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসের অফিস ছাড়াও তাঁরা গিয়েছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরে একটি প্রকল্প এলাকায়। পাশাপাশি, লি রোডে সুজয়কৃষ্ণের মেয়ে এবং জামাইয়ের ফ্ল্যাটেও যায় ইডি। একযোগে তিন জায়গায় তল্লাশি শুরু হয়। বিষ্ণুপুর এবং লি রোডে তল্লাশির কাজ শেষ হলেও আলিপুরের অফিসে তল্লাশি গড়ায় ভোর পর্যন্ত। ইডি সূত্রে খবর, সুজয়ের সংস্থা এসডি এন্টারপ্রাইজ়ের সঙ্গে লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসের লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে। ইডির চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে, ২০২০-২১ সালের মধ্যে সুজয়কৃষ্ণের এসডি এন্টারপ্রাইজ়ের সঙ্গে লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসের ৯৫ লক্ষ এক হাজার টাকা লেনদেন হয়েছে।
তল্লাশি অভিযানের পর লিখিত বিবৃতিতে ইডির দাবি, ‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস প্রাইভেট লিমিটেড’-এর চিফ এগজ়িকিউটিভ অফিসার (সিইও) তৃণমূলের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে লেখা হয়েছে, ২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ওই সংস্থার ডিরেক্টর পদে ছিলেন অভিষেক। যদিও ডায়মন্ড হারবারের দু’বারের সাংসদ অভিষেকের ২০১৪ বা ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে প্রার্থী হওয়ার সময়ে নির্বাচন কমিশনে জমা-দেওয়া হলফনামা পরীক্ষা করে দেখা যাচ্ছে, তাঁর ওই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকার কোনও তথ্য নেই। ২০১৪ সালের হলফনামায় তিনি জানিয়েছিলেন, ‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস প্রাইভেট লিমিটেড’ সংস্থার ১০ টাকা মূল্যের এক হাজারটি শেয়ার রয়েছে তাঁর। ২০১৯ সালে তার কথাও নেই।