রিষড়াকাণ্ডের জের! রিষড়া থানাকে নিয়ে নতুন সার্কেল তৈরি করল চন্দননগর পুলিস। তার দায়িত্ব দেওয়া হল প্রবীর দত্তকে। প্রবীর দত্ত রিষড়া থানার প্রাক্তন ওসি। তিনি চন্দননগর পুলিসের গোয়েন্দা বিভাগে ছিলেন। রিষড়া থানার ওসি থাকার সুবাদে তাঁর অভিজ্ঞতা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজে লাগবে বলে মনে করছে চন্দননগর পুলিস।
গত রবিবার রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে অশান্তি ছড়ায় রিষড়ার কয়েকটি এলাকায়। পরদিন রিষড়া ৪ নম্বর রেলগেট এলাকায় ফের অশান্তির ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে আক্রান্ত হয় পুলিস। আহত হন রিষড়া থানার ওসি পিয়ালি বিশ্বাস, শ্রীরামপুর থানার আইসি দিব্যেন্দু দাস সহ বেশ কয়েকজন পুলিসকর্মী। সেই ঘটনার পর এক সপ্তাহ হতে চলল। ধীরে ধীরে স্বাভাবিকের পথের রিষড়া। তবে এখনও জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা। শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় রিষড়ার বিভিন্ন এলাকায় টহল চলছে পুলিসের।
এমত অবস্থায় ওসির কাজকে তত্ত্বাবধানে রাখার জন্য তাঁর উপর একজন সার্কেল ইনসপেকটরকে নিযুক্ত করা হল। প্রসঙ্গত, চন্দননগর পুলিস কমিশনারেটের অধীনে ৭টি থানা রয়েছে। তারমধ্যে একমাত্র রিষড়া থানা-ই ওসি থানা। বাকি ৬টি থানা আইসি থানা। এবার থেকে রিষড়া থানাও একজন ইনসপেকটরের তত্ত্বাবধানে চলে এল।
উল্লেখ্য, শুক্রবার রিষড়াকাণ্ডে হাইকোর্টে রিপোর্ট জমা দেয় পুলিস। যে রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২ এপ্রিল রামনবমীর মিছিল থেকে স্থানীয়দের উদ্দেশে অশালীন ভাষা প্রয়োগ করা হয়েছিল। মিছিলে তরোয়াল, আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করা হয়। বেআইনি ডিজে বক্স ব্যবহার করা হয়। এমনকি মিছিল থেকে ইট-পাথর ছোড়া হয়। যার পালটা স্থানীয়রাও পরে ইট-পাথর ছুড়তে শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিসকে হিমশিম খেতে হয়।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, এর পরদিন অর্থাত্ ৩ এপ্রিল এলাকা শান্ত করতে ৪ নম্বর রেলগেট এলাকায় পুলিসের একটি বড় বাহিনী গেলে, ৫০০ থেকে ৬০০ স্থানীয় মানুষ জমায়েত করে। পুলিসের উপর ইট-পাথর ছুড়তে থাকে। পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। উন্মত্ত জনতাকে শান্ত করার সবরকম চেষ্টা পুলিস করে। কিন্তু জনতা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে বাঁশ, লাঠি নিয়ে পুলিসের উপর আক্রমণ করে। একটি সরকারি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পুলিস বাধ্য হয়ে কাঁদানে গ্যাস, স্ট্যাম্প গ্রেনেড, রবার বুলেট ব্যবহার করে।