পাইলট সৃষ্টিকে ‘ছক কষে খুন’ করেছেন প্রেমিক, দাবি পরিবারের, নেপথ্যে আরও এক মহিলা!

সৃষ্টি টুলি আত্মহত্যা করেননি! তাঁকে ‘পরিকল্পনা করে খুন’ করা হয়েছে। পাইলটের মৃত্যুতে এমনটাই দাবি করল তাঁর পরিবার। সোমবার মুম্বইয়ের মারোল এলাকার ভাড়া বাড়ি থেকে সৃষ্টির দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মোবাইল ফোনের ডেটা কেবল দিয়ে ছাদ থেকে ঝুলেছেন ২৫ বছরের পাইলট। যদিও ঘর থেকে কোনও সুইসাইড নোট মেলেনি। এই ঘটনায় সৃষ্টির প্রেমিক আদিত্য পণ্ডিতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সৃষ্টি উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের মেয়ে। বিমানচালক হওয়ার প্রশিক্ষণ নিতে গিয়ে আদিত্যের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল তাঁর। সৃষ্টি বিমানচালক হতে পারলেও প্রশিক্ষণ শেষে আদিত্য ব্যর্থ হয়েছিলেন। তার পরেও দু’জনের সম্পর্ক ছিল। সোমবার আদিত্যের সঙ্গে ফোনে ঝগড়া হয়েছিল সৃষ্টির। আদিত্য পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, ঝগড়ার পরে দ্রুত সৃষ্টি যে ফ্ল্যাটে থাকতেন, সেখানে গিয়েছিলেন। ফ্ল্যাটের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। চাবি তৈরির লোককে ডেকে নতুন চাবি তৈরি করিয়ে দরজা খুলেছিলেন তিনি। তার পর সৃষ্টিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

মৃতার কাকা বিবেক টুলির দাবি, সৃষ্টি আত্মহত্যা করেনি। তাঁর কথায়, ‘‘পরিকল্পনা করে ওকে খুন করা হয়েছে। ও খুব শক্ত মনের মেয়ে ছিল। না হলে বিমানচালক হতে পারত না। এখন ওর প্রেমিকের কথা শুনছি। ওর সঙ্গে বিমানচালক হওয়ার প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েছিল। কিন্তু আদিত্য ব্যর্থ হয়। তাই সৃষ্টিকে হিংসা করত। হেনস্থা করত।’’ বিবেক জানিয়েছেন, সম্প্রতি সৃষ্টির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি খতিয়ে দেখেছেন তাঁরা। সেখানে দেখা গিয়েছে, দীপাবলির সময় পরিবারকে ৬৫ হাজার টাকা পাঠিয়েছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমি নিশ্চিত টাকার জন্য সৃষ্টিকে ব্ল্যাকমেল করত আদিত্য। হয়তো ও দিতে চায়নি, সেটাই হয়তো ওর মৃত্যুর কারণ।’’

পুলিশ জেরায় জেনেছে, দিল্লির কাছে ফরিদাবাদে থাকতেন আদিত্য। সেখান থেকে প্রায়ই মুম্বই চলে আসতেন সৃষ্টির কাছে। এয়ার ইন্ডিয়া সংস্থায় চাকরি পাওয়ার পরে মুম্বইয়েই থাকতেন সৃষ্টি। তাঁর কাকা বিবেকের দাবি, মৃত্যুর ১৫ মিনিট আগেও মা এবং কাকিমার সঙ্গে কথা বলেছিলেন সৃষ্টি। সে সময় তাঁর গলা শুনে কিছুই বোঝা যায়নি। সৃষ্টির বন্ধুদের দাবি, প্রায়ই প্রকাশ্যে সৃষ্টির সঙ্গে ঝগড়া করতেন আদিত্য। তাঁর উপর চিৎকার-চেঁচামিচি করতেন। বিবেকের দাবি, এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছেন আরও এক মহিলা পাইলট। তাঁর দাবি, ওই মহিলাই সৃষ্টির ফ্ল্যাটের দরজার নকল চাবি তৈরির জন্য এক জনকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘পুলিশকে খবর না দিয়ে কেন নকল চাবি বানিয়ে খোলা হল ফ্ল্যাট? কারা করল সে সব? পুলিশের কাছে তদন্তের আর্জি জানাচ্ছি।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.