খবর নিয়ে জেনেছিলেন, জেল ক্যান্টিনে আলুর চপ ও বেগুনি ভাজা হচ্ছে। ব্যস, বায়না ধরলেন, তেলেভাজা খাবেন। সোমবার প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সেই বায়না মঞ্জুর করেছেন জেল-কর্তৃপক্ষ। প্রেসিডেন্সি জেলে পার্থই এখন যাবতীয় আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। তাঁর ছোটখাটো আবদার-বায়নার দিকেও নজর রাখছেন জেল-কর্তারা। দুপুরে জেলের অফিসে এক আইনজীবীর সঙ্গে মিনিট পনেরো কথা বলেন পার্থ।
জেল সূত্রের খবর, সকালে চা এবং মাখন টোস্ট খেয়েছেন পার্থ। দুপুরে ভাত-ডাল-তরকারি। বিকেলে জেলের পদস্থ কর্তারা পার্থের সেল পরিদর্শনে গেলে প্রাক্তন মন্ত্রী তাঁদের জানান, তিনি তেলেভাজা খেতে চান। আপত্তি ছিল জেলের চিকিৎসকদের। কিন্তু প্রাক্তন মন্ত্রী আপত্তি শুনতে নারাজ। তার আগেই তো তিনি খবর নিয়ে জেনেছিলেন, গরম গরম চপ আর বেগুনি তৈরি হচ্ছে জেল ক্যান্টিনে। শেষে চিকিৎসকেরা অনুমতি দেন।
জেল সূত্রের খবর, ক্যান্টিন থেকে দু’টি আলুর চপ, দু’টি বেগুনি এবং অল্প মুড়ি দেওয়া হয় পার্থকে। জেল ক্যান্টিন থেকে নিজের টাকায় কোনও খাবার কিনে খেতে পারেন বিচারাধীন বন্দিরা। পার্থের খাবারের ক্ষেত্রে অবশ্য চিকিৎসকদের নানা নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এবং চিকিৎসকদের বেঁধে দেওয়া খাদ্যতালিকা অনুসারেই তাঁকে খাবার দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তবে জেলের চিকিৎসকদের মতে, এক দিন তেলেভাজা খাওয়া যেতে পারে। তাতে তেমন শারীরিক অসুবিধা হওয়ার কোনও কারণ নেই।
জেল সূত্রের খবর, এ দিন সকালে চিকিৎসকেরা পার্থকে পরীক্ষা করতে গেলে প্রাক্তন মন্ত্রী তাঁদের জানান, কোমরে ও হাঁটুতে যন্ত্রণা হচ্ছে। তাঁর সেই বক্তব্যের ভিত্তিতে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এক কারাকর্তা। জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্সি জেলে কোনও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। তাই পার্থের বর্তমান শারীরিক সমস্যা দেখতে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে এক জন অস্থি বিশেষজ্ঞকে পাঠিয়ে তাঁর ব্যথা উপশমে একটি ‘গাইডলাইন’ তৈরির জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় ধৃত পার্থ-বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায় এ দিন আলিপুর মহিলা জেলে স্বাভাবিক খাওয়াদাওয়া করেছেন। তিনি অধিকাংশ সময়ই শুয়ে-বসে কাটিয়েছেন বলে জেল সূত্রের খবর।