‘পল্লবী জ্ঞান হারিয়েছে’, অভিশপ্ত রবিবারের সকালে পল্লবীর ফোন থেকে অভিনেত্রীর মা-কে ফোন করে ঠিক একথাই জানিয়েছিল প্রেমিক সাগ্নিক। অভিনেত্রীর ঝুলন্ত দেহ পাওয়া গিয়েছে, এমন কথা গোপন করেছিল সে। কিন্তু কেন? সেই প্রশ্ন বারবার তুলছে মৃতার পরিবার। গড়ফা থানায় নিজের জবানবন্দি দিতে গিয়ে কেঁদে ভাসাচ্ছে সাগ্নিক। পল্লবীর রহস্যমৃত্যুর মামলায় গত মঙ্গলবার অভিনেত্রীর লিভ ইন পার্টনারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। খুন, প্রতারণা, সম্পত্তি হস্তগত করার মতো অভিযোগ রয়েছে সাগ্নিকের নামে। যদিও ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট থেকে মনে করা হচ্ছে আত্মহত্যায় করেছেন পল্লবী।
সূত্রের খবর, পুলিশকে দেওয়া জবানবন্দিতে সাগ্নিক জানিয়েছেন ‘মনে করেছিলাম বেঁচে রয়েছে পল্লবী। তাই কাউকে কিছু না জানিয়েই ওকে নামিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম।’
১৫ই মে-র সকালে ঠিক কী ঘটেছিল? জেরার মুখে সাগ্নিক জানান, পরিচারিকার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করায় পল্লবীর সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়েছিল তাঁর। আচমকা সকালে পরিচারিকা জানায় সে আসতে পারবে না। এতেই মেজাজ হারিয়েছিলেন পল্লবী। এরপর পাশের ঘর থেকে ধূমপান করে এসে সাগ্নিক দেখেন বেডরুমের দরজা বন্ধ। এরপর সাগ্নিক দরজার কি-হোল দিয়ে পল্লবীর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। এরপর তাঁর চিৎকার শুনে এক মিস্ত্রিকে নিয়ে উপরে উঠে আসেন কেয়ারটেকার।
সাগ্নিক আরও যোগ করেন, তিনি পল্লবীকে ‘বাঁচানোর চেষ্টা’ করেছিলেন। তাই দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। পল্লবীর মায়ের নম্বর নাকি সাগ্নিকের ফোনে ছিল না, তাই পল্লবীর ফোন থেকে নম্বর ডায়েল করা। সঙ্গীতা দে-কে কেন মেয়ে অচেতন অবস্থায় রয়েছে, এমনটা জানিয়েছিল সাগ্নিক? অভিযুক্তর জবাব, পল্লবী আর নেই, সেটা নিজেই বিশ্বাস করেনি সে। প্রেমিকার মৃত্যুর খবর গোপন করার কোনও অভিপ্রায় তাঁর ছিল না, জানিয়েছে সে।
কেয়ারটেকার পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁরা দেখেন ঝুলন্ত পল্লবীকে নামানোর চেষ্টা করছেন সাগ্নিক। এরপর তাঁদের সাহায্যে প্রেমিকাকে নীচে নামিয়ে আনেন। সাগ্নিকের আইনজীবী অর্ঘ্য গোস্বামী এই ব্যাপারে জানান, ভালবাসার মানুষের মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারেন না। সাগ্নিক তাঁর প্রেমিকা পল্লবীকে ভালবাসতেন বলেই হয়ত মনে করেছিলেন, অভিনেত্রী তখনও বেঁচে রয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, জেরার মুখে সাগ্নিক স্বীকার করেছেন ভুয়ো কল সেন্টার চালাতেন তিনি। নিউটাউনে বসে অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দাদের টোপ দিয়ে টাকা হাতানোর কাজ চলত।