পারস্পরিক বোঝাপড়া আরও মজবুত করতে চতুর্দেশীয় সফরে গেলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। পাক সংবাদপত্র ‘ডন’ সে দেশের বিদেশ সচিবালয়কে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, পাঁচ দিনের সফরে চারটি দেশে যাবেন শাহবাজ়। প্রতিবেদনে এ-ও বলা হয়েছে যে, দ্বিপাক্ষিক নানা বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে সামরিক সংঘাতের সময় ‘পাশে দাঁড়ানোর’ জন্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলিকে ধন্যবাদ জানাবেন পাক প্রধানমন্ত্রী।
রবিবার ইসলামাবাদ থেকে তুরস্কের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন শাহবাজ়। সঙ্গে রয়েছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী তথা বিদেশমন্ত্রী ইশাক দার, তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লা তারার এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সচিব তারিক ফতেমি। তুরস্কের পর যথাক্রমে ইরান, আজ়ারবাইজান এবং তাজিকিস্তানে যাবেন শাহবাজ়রা।
পাকিস্তানের বিদেশ সচিবালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক নানা বিষয় নিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ তায়িপ এর্ডোয়ানের সঙ্গে কথা বলবেন শাহবাজ়। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এর্ডোয়ানের বার্তা বিভাগের প্রধানকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, রবিবার রাতে তুরস্কের রাজধানী ইস্তানবুলে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের বৈঠক হবে।
প্রসঙ্গত, ‘অপারেশন সিঁদুর’-পরবর্তী সংঘাতের আবহে তুরস্ক সরাসরি পাকিস্তানে অস্ত্রবোঝাই বিমান পাঠিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করে তুরস্ক প্রশাসন। তবে পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটিতে ভারতের সামরিক অভিযানের পরেই পাকিস্তান ‘শান্ত এবং সংযমী’ নীতিকে সমর্থন করে তুরস্ক। ইসলামাবাদের তরফে দাবি করা হয়, ইস্তানবুল তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে। অন্য দিকে, ইরান দু’পক্ষের মধ্যে সংঘাত থামাতে মধ্যস্থতার বার্তা দেয়।
সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের আবহে তুরস্ক এবং আজ়ারবাইজান— এই দুই দেশ সরাসরি পাকিস্তানকে ‘সমর্থন’ করেছে বলে অভিযোগ ওঠে। তার পরেই দু’টি দেশে বেড়াতে যাওয়ার বুকিং হু হু করে বাতিল করতে থাকেন ভারতের পর্যটকদের একাংশ। দু’টি দেশের অর্থনীতিতেই পর্যটনের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ‘পাক সমর্থক’ ওই দুই দেশকে ভাতে মারার কৌশল নেন ভারতের ভ্রমণপিপাসুরা। তবে ভারত ‘বয়কট’ করলেও ‘বন্ধু’ দেশগুলির সঙ্গে বোঝাপড়া আরও মজবুত করতে চায় পাকিস্তান। আন্তর্জাতিক স্তরে নিজের গ্রহণযোগ্যতাও বৃদ্ধি করতে চায়। সেই সূত্রেই শাহবাজ়ের এই সফর বলে মনে করা হচ্ছে। অবশ্য এই দেশগুলির মধ্যে ইরানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক বেশ মসৃণ। কিন্তু ইসলামাবাদ তেহরানকেও ‘বন্ধু’ বলে উল্লেখ করে দু’দেশের নৈকট্য বোঝাতে চাইছে বলে মনে করা হচ্ছে।