মদ্যপ সিভিকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পথে হাঁটতে চলেছে লালবাজার। কলকাতা পুলিশের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, অতীতে কর্মরত অবস্থায় যে সমস্ত সিভিক ভলান্টিয়ারকে মত্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে এবং যে সকল সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়মিত মদ্যপান করে থাকেন, তাঁদের কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হবে। এই বিষয়ে কোনও অভিযোগ এলেই তা খতিয়ে দেখবেন কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার পদমর্যাদার এক আধিকারিক। তার পরেই অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারকে নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
লালবাজারের এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে শুক্রবার রাতের বিটি রোডের ঘটনা প্রভাব ফেলেছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ। আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার রাতে সিঁথি এলাকায় বিটি রোডে কর্মসূচির আয়োজন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া এবং প্রাক্তনীরা। সেখানে এক সিভিক ভলান্টিয়ারের আচরণে আপত্তি তোলেন তাঁরা। অভিযোগ, মত্ত অবস্থায় ওই সিভিক ভলান্টিয়ার বাইক নিয়ে তাঁদের ব্যারিকেডে ধাক্কা মারেন। তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না করেই ছেড়ে দেন সেখানে কর্মরত এক ট্র্যাফিক সার্জেন্ট। এর পর ওই ট্র্যাফিক সার্জেন্টকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান আন্দোলনকারীরা। সকাল পর্যন্ত ওই সার্জেন্টকে আটকে রাখা হয়েছিল রাস্তায়। রাতে কী কী ঘটেছিল, তার একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। সেই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, সিভিক ভলান্টিয়ারের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েছেন রবীন্দ্রভারতীর পড়ুয়ারা।
শনিবার সকালে অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার এবং সার্জেন্টের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন পড়ুয়ারা। অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারকে কাশীপুর থানার হেফাজতে রাখা হয়। তার পরে অবরোধ তোলেন পড়ুয়ারা। শনিবার সন্ধ্যায় লালবাজারের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ওই ট্র্যাফিক সার্জেন্টকেও ‘ক্লোজ’ করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হতে পারে।
সম্প্রতি আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত হিসাবে এক সিভিক ভলান্টিয়ার গ্রেফতার হয়েছেন। অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার হলেও পুলিশের জন্য নির্দিষ্ট বেশ কিছু সুযোগসুবিধা ভোগ করতেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে। এই আবহে কলকাতায় তো বটেই, গোটা রাজ্যে সিভিক ভলান্টিয়ারদের একাংশের ‘অতিসক্রিয়তা’ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই আবহে মত্ত সিভিকদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করার ইঙ্গিত দিল লালবাজার।