ইতিহাসে বিভাজনের রাজনীতি প্রবেশ করাতে চাইছে বিজেপি। এমনই অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে রাজস্থানে। সেখানে এখন কংগ্রেস সরকার থাকলেও আগে ছিল বিজেপি সরকার। তখনও একবার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু ফলপ্রসূ হয়নি। কিন্তু এখন কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদীর সরকার রয়েছে। তাই কেন্দ্রীয় সরকারের অঙ্গুলিহেলনে সেখানকার ঐতিহ্যশালী রক্ততলাই ফলক বা স্মারক সরিয়ে ফেলতে চলেছে ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক দফতর। এটি একটি কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা।
রাজস্থানের রাজশামন্দ জেলায় এই ফলক বা স্মারক রয়েছে। কেন এই স্মারক সরিয়ে ফেলতে চাওয়া হচ্ছে? ইতিহাসে উল্লেখ রয়েছে, ১৫৭৬ সালের ১৮ জুন সেনাপতি মান সিং–এর নেতৃত্বে চিতোরের মহারাণা প্রতাপের সঙ্গে যুদ্ধ হয় সম্রাট আকবরের বাহিনীর। এই যুদ্ধে পরাজিত হয়ে চিতোর ছেড়ে দক্ষিণের মেওয়ার পাহাড়ে আশ্রয় নেন মহারাণা প্রতাপ। তাঁর বীরত্ব, সাহসিকতা, আত্মত্যাগ এবং দেশপ্রেমের নানা কথা রাজস্থানের ওই ফলকে বা স্মারকে বর্ণিত আছে। কিন্তু হলদিঘাটের যুদ্ধে যে তাঁর পরাজয় হয়েছিল, সে কথাও সেখানে লেখা রয়েছে। কিন্তু সে ইতিহাস এবার বদলে দিতে ওই ফলক বা স্মারক সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে দেশের প্রত্নতাত্ত্বিক সংস্থা।
ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ বা দফতর নির্দেশ দিয়েছে, এই বিতর্কিত ফলক বা স্মারক সরিয়ে ফেলতে হবে। রাজপুতদের সংগঠন থেকেও এই আওয়াজ উঠেছে। রাজশামন্দ এলাকার সাংসদ দিয়া কুমারি ২৫ জুন একই দাবি জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় পর্যটন ও সাংস্কৃতিক মন্ত্রীকে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে এই ফলক সংশোধন করতে বলেছিলেন সাংসদ দিয়া কুমারি। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল নিশ্চিত করেন যে, এই নির্দেশ তিনি প্রত্নতাত্ত্বিক সংস্থাকে দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন এই ইতিহাসকে পাল্টে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। সেখানে তখন মহারাণা প্রতাপ নন, পরাজয় ঘটেছিল আকবরেরই—এই বক্তব্যে নতুন ইতিহাস বই লেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এবার ফলক বা স্মারকটাই সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুতরাং মধ্যযুগের ইতিহাস পাল্টে দিতেই এই কাজ করা হচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। ইতিমধ্যেই যোধপুর সার্কেলের এএসআই দফতরের সুপারিনটেন্ডেন্ট নেগী এই ফলক বা স্মারক সরানোর চিঠি পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।