জল্পনা চলছিল। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর এবার ‘এক দেশ, এক ভোট’ নীতি রূপায়ণের পথে আরও একধাপ এগোল মোদী সরকার। সংসদে এখন শীতকালীন অধিবেশন চলছে। সূত্রের খবর, চলতি অধিবেশনেই বিল আনা হতে পারে। তবে সংখ্য়াগরিষ্ঠতার জোরেই পাশ করিয়ে নেওয়া নয়, বরং এই বিলে ঐক্য়মত তৈরি করতেই চায় সরকার। সেকারণে বিস্তারিত আলোচনার জন্য বিলটিকে পাঠানো হতে যৌথ সংসদীয় কমিটিতে।
‘এক দেশ, এক ভোট’ বিল নিয়ে সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করবে যৌথ সংসদীয় কমিটি। বাদ যাবেন না সমস্ত রাজ্যের বিধানসভা অধ্যক্ষ ও বুদ্ধিজীবীরাও। সাধারণ মানুষের মতামতও নেওয়া হবে। বস্তুত, সাধারণ মানুষ কী ভাবছেন? সেটাই আপাতত জানতে চায় সরকার। তারপরেই ‘এক দেশ, এক ভোট’ নীতি বাস্তবায়নের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা হবে। সূত্রের খবর তেমনই।
কেন ঐক্য়মতের উপর জোর? রাজনৈতিক মহলের মতে, সংসদে ঐক্যমত ছাড়া এই ‘এক দেশ, এক ভোট’ নীতি রূপায়ণ করা কার্যত অসম্ভব। কারণ, সংবিধান সংশোধনের জন্য় কমপক্ষে ৬ বিল আনতে হবে সংসদে। যা পাস করাতে সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন। এখন সংসদের উভয় কক্ষেই সংখ্যাগরিষ্ঠ এনডিএ-ই। কিন্তু রাজ্যসভা, এমনকী লোকসভাতেও তাদের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই।
এদিকে কেন্দ্রের ‘এক দেশ-এক নির্বাচনে’র প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিরোধীরা। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেই উচ্চ পর্যায়ের কমিটি সম্পাদক নীতীন চন্দ্রকে চিঠি দিয়েছিলেন তিনি। মমতার মতে, ‘যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এই ভাবনা অস্বচ্ছ ও অগণতান্ত্রিক। রাজ্যের মতামত ছাড়াই একতরফাভাবে উপর থেকে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে’। প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘কমিটিতে কেন কোনও মুখ্যমন্ত্রীকে রাখা হয়নি’?
ঘটনাটি ঠিক কী? এখন দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বিধানসভা ভোট হয় বিভিন্ন সময়ে। আবার কেন্দ্রীয় সরকারের মেয়াদ শেষ হলে, লোকসভা ভোট! এই ব্যবস্থাটিকে এবার বদলে ফেলতে চাইছে মোদী সরকার। ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ প্রস্তাব খতিয়ে দেখার জন্য প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গড়েছিল মোদী সরকার। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু-র কাছে রিপোর্ট জমা পড়ার পর, ‘এক দেশ-এক নির্বাচনে’র প্রস্তাবে এবার সায় দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাও। কবে? চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে।