মণিপুরে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটানোর ঘটনায় আরও এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এই নিয়ে মোট গ্রেফতারির সংখ্যা হল সাত। সোমবার মণিপুরের থৌবল জেলা থেকে ওই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মণিপুরের একটি আদিবাসী সংগঠনের দাবি, মহিলাদের বিবস্ত্র করে হাঁটানোর অভিযোগে এখন ধরপাকড় শুরু হলেও মূল ঘটনা দু’মাস আগের। গত ৪ মে রাজধানী ইম্ফল থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে কাংপোকপি জেলায় ওই দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটানো হয়। তাঁদের একটি মাঠে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলেও দাবি ওই আদিবাসী সংগঠনের। অভিযোগ, এই ঘটনায় অনেক আগেই থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু এত দিন পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল।
কিছু দিন আগে ঘটনার একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে (যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। ২৬ সেকেন্ডের ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসার পরেই দেশ জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। মণিপুরের ঘটনার নিন্দায় সরব হয় নানা মহল। এমনকি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও এই ঘটনার নিন্দা করেন। তার পরেই একে একে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়।
এই ঘটনায় প্রথম গ্রেফতারি হয়েছিল গত ২০ জুলাই, বৃহস্পতিবার। পরে ওই দিনই আরও তিন অভিযুক্ত ধরা পড়েন। এর পর শনিবার এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পঞ্চম অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। ওই দিনই পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় ষষ্ঠ অভিযুক্তও, তবে সে নাবালক।
গত ৩ মে ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত হয় মণিপুরে। সে দিন রাত থেকেই বিভিন্ন এলাকায় জনজাতি গোষ্ঠীভুক্ত কুকিদের সঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইদের সংঘর্ষ শুরু হয়। দু’সম্প্রদায়েরই বহু মহিলা নির্যাতনের শিকার হন বলে অভিযোগ।
এই ঘটনায় মণিপুরের ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকারকে কাঠগড়ায় তুলে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের পদত্যাগ দাবি করেছে বিরোধীরা। অন্য দিকে, অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ডের আবেদন করেছেন সমাজকর্মী অন্না হজারে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামদাস অটওয়ালে প্রমুখ। গত ৩ মে থেকে মণিপুরে চলা জাতিগত হিংসায় এখনও পর্যন্ত ১৬০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন বহু মানুষ।