আরও এক বার পিছোল বিনেশ ফোগাট মামলার রায়দান, ভারতীয় কুস্তিগির রুপো পাবেন কি না, জানা যাবে শুক্রবার রাতে

বিনেশ ফোগাটের মামলার রায় মঙ্গলবার জানাল না আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালত। আরও এক বার পিছিয়ে গেল রায়দান। আগামী শুক্রবার ভারতীয় সময় রাত সাড়ে ৯টায় রায় জানানো হবে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালত। এই নিয়ে তৃতীয় বার পিছিয়ে গেল রায়দান।

প্যারিস অলিম্পিক্সে মহিলাদের কুস্তির ৫০ কেজি বিভাগের ফাইনালে উঠেছিলেন বিনেশ। ফাইনালের দিন সকালে তাঁর শরীরের ওজন অনুমোদিত মাত্রার থেকে ১০০ গ্রাম বেশি হওয়ায় তাঁকে প্রতিযোগিতা থেকে বাতিল করা হয়। বিশ্ব কুস্তি সংস্থার সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতে আবেদন করেছিলেন বিনেশ। ভারতীয় কুস্তিগির দাবি করেছিলেন, তাঁর ফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছান পর্যন্ত ওজন নিয়ে কোনও সমস্যা ছিল না। তা হলে ফাইনালে না খেলতে পারায় তাঁকে অন্তত রুপো দেওয়া উচিত ছিল। সেই আবেদনেরই সিদ্ধান্ত জানানোর কথা আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালত। গত শুক্রবার শুনানি শেষ হওয়ার পর জানানো হয়েছিল, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রায় ঘোষণা হবে। সেই মতো শনিবার ভারতীয় সময় রাত সাড়ে ৯টার মধ্যে রায় ঘোষণার কথা থাকলেও হয়নি। রায়দানের দিন পিছিয়ে মঙ্গলবার নির্ধারিত হয়। সেই সময় আবার পিছিয়ে আগামী শুক্রবার করা হল।

গত শুক্রবার তিন ঘণ্টা ধরে বিনেশের মামলা শোনেন আদালতের বিচারক অ্যানাবেল বেনেট। সেখানে বিনেশের হয়ে লড়েন ফ্রান্সের চার জন আইনজীবী। তা ছাড়া ভারতীয় অলিম্পিক্স সংস্থার হয়ে হরিশ সালভে ও বিদুষ্পত সিঙ্ঘানিয়া ভার্চুয়াল মাধ্যমে যোগ দিয়েছিলেন শুনানিতে। তাঁরা প্রমাণ করার চেষ্টা করেন যে, বিনেশ বেআইনি কিছু করেননি। কোনও অসদুপায় অবলম্বন করেননি। যোগ্য হিসাবেই সেমিফাইনালে উঠেছিলেন। তা হলে কেন তাঁকে রুপো দেওয়া হবে না?

বিনেশের প্রতিপক্ষ ছিল বিশ্ব কুস্তি সংস্থা ও আন্তর্জাতিক অলিম্পিক্স সংস্থা। তারাও নিজেদের বক্তব্য জানায় আদালতকে। বিনেশের আইনজীবীরা শুনানিতে বলেন, শরীরের স্বাভাবিক ক্রিয়ায় ওজন বেড়েছে। প্রত্যেক খেলোয়াড় নিজের শরীরের খেয়াল রাখেন। প্রতিযোগিতার প্রথম দিন বিনেশের ওজন ৫০ কেজির নীচেই ছিল। পরে ওজন বাড়ে। এটা স্বাভাবিক পদ্ধতি। এর মধ্যে কোনও অনিয়ম নেই।

অন্য দিকে, আন্তর্জাতিক অলিম্পিক্স সংস্থার প্রধান টমাস বাক বলেছিলেন, ‘‘সব কিছুর একটা নিয়ম আছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাকে সেই নিয়ম মেনে চলতে হয়। আমি জানি বিনেশের কাছে বিষয়টা সহজ নয়। ওর জন্য খারাপ লাগছে। কিন্তু নিয়ম তো নিয়মই। সেটা সকলের জন্য সমান। ওকে রুপো দেওয়ার কোনও যুক্তি নেই।” তিনি আরও বলেছিলেন, “আমরা এটা বলতে পারি না যে ১০০ গ্রাম ওজন বেশি থাকলে খেলতে দেব, কিন্তু ১০২ গ্রাম বেশি থাকলে দেব না। খেলায় এক সেকেন্ডের হাজার ভাগ করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এ বারের অলিম্পিক্সেই সেটা দেখা গিয়েছে (পুরুষদের ১০০ মিটার দৌড়ে সেকেন্ডের হাজার ভাগের হিসাবে কিশানে থম্পসনকে হারিয়েছেন নোয়া লাইলস)। তা হলে সেই সব ক্ষেত্রে কী হবে?”

১৯৮৩ সালে গঠন করা হয়েছিল আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালত। খেলা সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ সেখানে করা য়ায়। এই আদালতে ব্যক্তিগত ভাবে ক্রীড়াবিদেরা অভিযোগ করতে পারেন। আবার কোনও দেশের ক্রীড়া সংস্থাও সেখানে অভিযোগ করতে পারে।

অনেক সময় আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালত সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে নির্দেশ দেয়, বিবৃতি জারি করে সেই ক্রীড়াবিদের কাছে ক্ষমা চাইতে। কারণ, সংস্থার সিদ্ধান্তের কারণে ক্রীড়াবিদের মানহানি হয়েছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে আর্থিক ভাবে সেই ক্রীড়াবিদকে ক্ষতিপূরণও দিতে হয়। তবে আন্তর্জাতিক আদালতের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। তার বিরুদ্ধে আর আবেদন করা যায় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.