উইনিংস স্ট্রোক নিয়ে সটান ফিলিপে শাঁতিয়ের কোর্টে শুয়ে পড়লেন তিনি। বুঝিয়ে দিলেন তিনি ‘চ্যাম্পিয়ন’, অন্য গ্রহেরই টেনিস খেলোয়াড়। রবিবাসরীয় রোলাঁ গারোজে শেষ হাসি হাসলেন সেই নোভাক জকোভিচই ( Novak Djokovic)। নরওয়েল ক্যাসপার রুডকে (Casper Ruud) হারিয়ে জকোভিচই যে, তা একপ্রকার ললাটলিখনই ছিল। এদিনও ঘটল ঠিক সেটাই। জকোভিচ ৭-৬, ৬-৩, ৭-৫ গেমে হারালেন রুডকে। ২৩ তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতে লিখে ফেললেন ইতিহাস। ট্রফির নিরিখে সার্বিয়ান সুপারস্টারই হয়ে গেলেন বিশ্বের শ্রেষ্ঠ পুরুষ খেলোয়াড়। জকোভিচ এদিন ৩৬ বছর ২০ দিনে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতলেন। এত বেশি বয়সে কেউ ফরাসি ওপেন জেতেননি। পাশাপাশি এদিন জকোভিচ প্রথম পুরুষ টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে আরও একটি নজির গড়েছেন। প্রতিটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম ন্যূনতম তিনবার করে জেতার রেকর্ড করলেন।
জকোভিচ যে এবার চ্যাম্পিয়ন হতে চলেছেন, তা এই টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই কার্যত ঠিক হয়ে গিয়েছিল। ট্রফিতে তাঁর চুমু আঁকা ছিল স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।এবার রোলাঁ গারোজ দেখেনি ‘লাল সুড়কির সম্রাট’ রাফায়েল নাদালকে (Rafael Nadal)। ফরাসি ওপেন শুরুর চার দিন আগে নাদাল সাংবাদিক বৈঠক করে বলেছিলেন যে, চোটের জন্য রোলাঁ গারোজে নামবেন না তিনি। ১৪ বারের ফরাসি ওপেন জয়ী চোটের জন্যই ফরাসি ওপেন থেকে নাম তুলে নেন। ২০০৫ সালে প্রথমবার ফরাসি ওপেন খেলেছিলেন নাদাল। অভিষেকেই রোঁলা গারোয় শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট ছিনিয়ে নিয়েছিলেন। তারপর থেকে কখনও পয়মন্ত টুর্নামেন্টে তিনি নামেননি, এমনটা ঘটেনি। নাহলে ২২টি গ্র্যান্ড স্লামের মধ্যে ১৪টিই এই টুর্নামেন্ট থেকে আসত না। এই প্রথম নাদালহীন ফরাসি ওপেন। আর এই নাদালকে টপকেই ২৩ নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যাম ছিনিয়ে নেন জকোভিচ। জকোভিচ জেতার সঙ্গে সঙ্গেই নাদালের ট্যুইট চলে আসে। নাদাল লেখেন, ‘অসাধারণ এই কৃতিত্বের জন্য তোমাকে অনেক শুভেচ্ছা জকোভিচ। ২৩ এমন একটি সংখ্যা, যা কয়েক বছর আগে ভাবতেও অসম্ভব মনে হত। তুমি আজ করে দেখালে। পরিবার এবং দলের সঙ্গে এই জয় উপভোগ করো।’
এই নিয়ে টানা দ্বিতীয়বার ফরাসি ওপেনের ফাইনালে উঠেছিলেন রুড। গতবার তাঁকে হারতে হয়েছিল নাদালের কাছে। মনে করা হচ্ছিল যে, সাম্প্রতিক সময়ে সুড়কির কোর্টে জাত চেনানো বছর চব্বিশের ওসলোর বাসিন্দা, হয়তো ৩৬ বছরের বেলগ্রেডের বাসিন্দাকে বেগ দেবেন। কিন্তু না জকোভিচের লড়াই করার অদম্য মানসিকতার সামনে স্ট্রেইট সেটে উড়ে গেলেন রুড। দেখতে গেলে জকোভিচ ফাঁকা মাঠে গোল দিয়ে গেলেন। আবারও বুঝিয়ে দিলেন যে, অভিজ্ঞতার দামই আলাদা। ফরাসি ওপেন দেখতে এদিন চাঁদের হাট বসেছিল। গ্যালারিতে চোখ সরানো যায়নি। ফুটবলার কিলিয়ান এমবাপে, অলিভার জিরু, জালাটন ইব্রাহিমোভিচরা যেমন ছিলেন। তেমন ছিলেন কিংবদন্তি বক্সার মাইক টাইসন। খেলা দেখতে এসেছিলেন অভিনেতা হিউ গ্রান্টও।