বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে কোনও তাড়াহুড়ো চায় না ভারত। শুধু তা-ই নয়, কোনও চাপের কাছে নতিস্বীকার করা হবে না। শুক্রবার জার্মানির ‘বার্লিন বৈঠকে’ ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল স্পষ্ট করেন, ভারত কেবল সেই বাণিজ্যচুক্তিই সই করবে, যা দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
শুক্রবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনা করছি। কথা বলছি আমেরিকার সঙ্গেও। কিন্তু আমরা তাড়াহুড়ো করে কোনও চুক্তি করব না। শুধু তা-ই নয়, সময়সীমা দিয়ে বা মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে কোনও চুক্তি করানো যাবে না।’’ তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, বাণিজ্যচুক্তি চায় ভারতও। এই নিয়ে আলোচনাও চলছে। তবে দেশের অগ্রাধিকার সংক্রান্ত বিষয়গুলির সঙ্গে কোনও আপস করবে না নয়াদিল্লি।
পীযূষের কথায়, ‘‘ভারত কখনই তাড়াহুড়ো করে কোনও সিদ্ধান্ত নেয় না।’’ বাণিজ্য সংক্রান্ত চুক্তিগুলিকে ভারত স্বল্পমেয়াদি সুবিধার চেয়ে দীর্ঘমেয়াদি লাভের দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করে। এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও জানান, উচ্চশুল্কের প্রভাব কমাতে এবং দেশের রফতানিকারকদের জন্য ন্যায্য বাণিজ্য শর্ত নিশ্চিত করতে ভারত নতুন বাজারেরও খোঁজ করছে। বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে পীযূষের বক্তব্য, ‘‘আমি মনে করি না ভারত কখনও জাতীয় স্বার্থ ছাড়া অন্য কোনও বিষয়ে বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরেই আমেরিকা সফরে গিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সময়েই ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি হওয়ার কথা জানান দুই রাষ্ট্রপ্রধান। তবে বিগত কয়েক মাসের মধ্যে সেই চুক্তি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। দুই দেশের প্রতিনিধিদল বার বার চুক্তির বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করেছেন। বার কয়েক সেই প্রতিনিধি দলে ছিলেন ভারতের কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রীও। তবে কোনও পক্ষই চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যাপারে চূড়ান্ত কোনও ঘোষণা করতে পারেনি। কবে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েই গিয়েছে।
বাণিজ্যচুক্তি জটের মধ্যেই ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে রাশিয়া থেকে তেল কেনার ‘শাস্তি’ হিসাবে ভারতীয় পণ্যের উপর জরিমানা-সহ মোট ৫০ শতাংশ শুল্কের বোঝা চাপিয়েছে আমেরিকা। ট্রাম্পের অভিযোগ, ভারতের সঙ্গে ব্যবসার লভ্যাংশ ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যবহার করছে রাশিয়া। রুশ তেল কেনা বন্ধ করতে দীর্ঘ দিন ধরে ভারতকে চাপ দিচ্ছে হোয়াইট হাউস। বিগত কয়েক দিনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বার বার দাবি করছেন, রাশিয়া থেকে তেল কেনার পরিমাণ কমাবে ভারত, তাঁকে এ বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী। শুধু তা-ই নয়, বাণিজ্যচুক্তি নিয়েও তিনি যে আশাবাদী, তা-ও প্রকাশ করেন ট্রাম্প। যদিও এখনও বাণিজ্যচুক্তির কোনও চূড়ান্ত সময় জানানো হয়নি।

