এসএসসি-র সব নিয়োগের (নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ, গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি) প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরে যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের চাকরি থাকার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। এসএসসি মামলায় মঙ্গলবার এমনটাই জানাল কলকাতা হাই কোর্টের বিশেষ বেঞ্চ। মঙ্গলবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রসিদির ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, প্যানেলের মেয়াদ শেষের পরে কোনও প্রার্থী চাকরি পেলে সেই চাকরি থাকবে না।
ডিভিশন বেঞ্চে এসএসসি মামলার শুনানি চলাকালীন, মামলাকারীদের একাংশের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তিনি যাঁদের হয়ে সওয়াল করছেন তাঁরা প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর চাকরি পাননি। গাজ়িয়াবাদের নাইসার অফিস থেকে কোনও হার্ড ডিস্ক উদ্ধার হয়নি বলেও তিনি আদালতে দাবি করেন। কল্যাণের দাবি, সেই সংক্রান্ত প্রমাণও তাঁদের কাছে রয়েছে। সিবিআই যা বলছে তা সঠিক নয় বলেও আদালতে দাবি করেন কল্যাণ। এর পর কল্যাণের উদ্দেশে বিচারপতি বসাক প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনি কি এসএসসির ডাটাবেস নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন?’’ উত্তরে কল্যাণ বলেন, ‘‘সিবিআইয়ের নথি এবং তথ্য নিয়ে সংশয় রয়েছে।’’
অন্য দিকে, মঙ্গলবার আদালতে এসএসসি জানায়, প্রথমে তাদের সার্ভার থেকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছিল। তদন্তের পরে সিবিআই গাজ়িয়াবাদের নথি দেওয়ার পরে তা খতিয়ে দেখা হয়। পরে আদালতের নির্দেশে নিয়োগপত্র প্রত্যাহারও করে নেওয়া হয়। এর পরেই কল্যাণের যুক্তি, গাজ়িয়াবাদের হার্ড ডিস্কের সত্যতা আদালতের সামনে প্রমাণিত না হলে চাকরিপ্রার্থীদের চাকরি বহাল থাকা উচিত। কারণ, ওই হার্ড ডিস্কের কোনও ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হয়নি। ফলে তাতে থাকা নথির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এর পরেই এসএসসির উদ্দেশে বিচারপতি বসাকের প্রশ্ন, ‘‘আপনাদের সার্ভারে যে তথ্য আছে সেগুলি নাইসার দেওয়া তথ্যই তো?’’ এসএসসির আইনজীবী সম্মতি জানিয়ে জানান, গাজ়িয়াবাদের নাইসা থেকেই প্যানেলের তথ্য এসেছিল। বুধবার আরও বিস্তারিত ভাবে মামলাটির শুনানি হবে বলে জানিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এসএসসি-র গ্ৰুপ সি, গ্ৰুপ ডি, নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির সব মামলার শুনানি চলছে হাই কোর্টের বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চে। হাই কোর্টের নির্দেশে গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি এবং নবম-দশমের অনেকের চাকরি বাতিল হয়। চাকরিহারাদের একাংশ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। সুপ্রিম কোর্ট হাই কোর্টের বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি ফেরত পাঠায়। প্রথম দিনের শুনানিতেই হাই কোর্ট এসএসসি-কে বলেছিল, অবস্থান জানিয়ে তাদের রিপোর্ট জমা দিতে হবে। অনিয়মের ঘটনা ঘটলে তারা কী করে এবং এ ক্ষেত্রে তারা কী পদক্ষেপ করেছে, তা জানতে চায় আদালত।