দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরে ৪০০ বিঘা জলাজমি বুজিয়ে আবাসন প্রকল্প। সেই নির্মাণকে অবৈধ ঘোষণা করে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালত (National Green Tribunal)। ২০০০ ফ্ল্যাটের সেই আবাসন প্রকল্প নিয়ে চার বছর ধরে আইনি লড়াই চলেছে। অবশেষে পরিবেশ আদালত এই রায় দিয়েছে। যা নিয়ে মামলার আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায় উচ্ছ্বসিত। একে যুগান্তকারী আখ্যা দিয়েছেন। ২০০৮ সালে বাম জমানায় সোনারপুরে এই আবাসনের প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল। নেপথ্যে ছিলেন বাম বিধায়ক ঘনিষ্ঠ এক প্রোমোটার। আদালতে তিনি জানান, ২০০৪ সালে খেয়াদহ পঞ্চায়েতের অনুমতিতেই এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়।
মামলার আইনজীবী বলেছেন, ‘পঞ্চায়েত প্রধানের অনুমতির এখানে কোনও মান্যতা নেই। ওই প্রোমোটার ভোলা পাইক অবৈধভাবে প্রায় ৪০০ বিঘা জলাজমি বুজিয়ে এই আবাসন প্রকল্পের কাজ শুরু করেন।’ সোনারপুরের এই আবাসন প্রকল্পের বিরোধিতা করে এফআইআর হয়েছিল সেই সময়। পরে পরিবেশ আদালতে হলফনামা জমা পড়ে। জেলাশাসক থেকে শুরু করে পুলিশ সুপার, পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের সচিব প্রত্যেকে ওই প্রোমোটারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। কিন্তু প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের আপত্তিতেও কোনও কাজ হয়নি। উলটে বাম বিধায়কের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুযোগ নিয়ে নিজের দাপট দেখিয়ে কাজ শুরু করেন ওই প্রোমোটার।
জলাজমি বুজিয়ে গড়ে ওঠা এই বেআইনি আবাসন প্রকল্পের বিরোধিতা করে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তথা অল ইন্ডিয়া লিগাল এড ফোরামের সাধারণ সম্পাদক জয়দীপ মুখোপাধ্যায়। এই বিষয়ে তিনি বর্তমান রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপ আবেদন করেছিলেন। কিন্তু কোনও সুরাহা না হওয়ায় তিনি জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলা করেন। পরিবেশ দূষণের বিধিভঙ্গে হয়েছে বলে আবাসন প্রকল্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।