ফেব্রুয়ারি মাসেই আমেরিকায় গিয়েছিলেন তিনি। দু’মাসের মাথায় আবার এক বার মার্কিন সফরের পথে ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তাঁর অফিস জানিয়েছে, রবিবারই আমেরিকার উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন তিনি। সোমবার হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। কী কী বিষয়ে দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে কথা হতে পারে, তা-ও খোলসা করেছে নেতানিয়াহুর দফতর।
ফেব্রুয়ারিতে যখন নেতানিয়াহু, ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিল তখন আলোচনার প্রধান বিষয়ই ছিল ইজ়রায়েল-হামাস যুদ্ধ! সেই বৈঠক থেকেই হামাসের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি এক প্রকার ঘোষণার সুরেই বলেছিলেন, ‘‘আমরা গাজ়া দখল করবই!’’ তাঁর সুরে সুর মিলিয়েছিলেন নেতানিয়াহুও। ট্রাম্পকে স্বাগত জানিয়েছিলেন তিনি। গত দু’মাসে ইজ়রায়েল-হামাস যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়েছে। নতুন করে হামাসের বিরুদ্ধে হামলা শুরু করেছে ইজ়রায়েলি সেনা। প্রায়ই ইজ়রায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়ছে গাজ়া ভূখণ্ডে। এই আবহে কাতার এবং মিশরের মধ্যস্থতায় ফের যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনাও চলছে।
তবে সোমবারের বৈঠকে শুধু গাজ়া, হামাস নিয়ে আলোচনা হবে, তা নয়। কারণ, এর মধ্যে বিশ্বে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটে গিয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হল বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের ‘পাল্টা শুল্ক’ ঘোষণা। বাদ যায়নি ইজ়রায়েলও। ট্রাম্পের ঘোষণা মতো ইজ়রায়েলের উপরও ১৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে শুল্কনীতি নিয়ে আলোচনা করবেন। একই সঙ্গে গাজ়া থেকে পণবন্দিদের ফিরিয়ে আনা, ইজ়রায়েলি-তুরস্ক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হবে দুই নেতার মধ্যে।
উল্লেখ্য, গাজ়ায় ক্রমাগত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে’ নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে সেই বিষয়টিও উঠতে পারে। একই সঙ্গে দুই রাষ্ট্রনেতার আলোচনায় উঠে আসতে পারে ইরান প্রসঙ্গও। কারণ, ইজ়রায়েল এবং আমেরিকা, দুই দেশের কাছেই এখন মাথাব্যথার কারণ তেহরান। ট্রাম্প চাইছেন ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষর করতে। গত কয়েক দিনে এই নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বাগ্যুদ্ধও শুরু হয়েছে। ট্রাম্প একের পর এক হুঁশিয়ারি দিয়ে যাচ্ছেন। উল্টো দিকে, ইরানও স্পষ্ট জানিয়েছে, ট্রাম্পের হুমকির সামনে তারা মাথা নত করবে না! আবার ইজ়রায়েলের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক ভাল নয়। দুই দেশই সুযোগ বুঝে একে অপরের বিরুদ্ধে হামলা, পাল্টা হামলার পথে হাঁটে। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর বৈঠকে ইরান যে গুরুত্ব পাবে, তা বলা বাহুল্য।