ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়কের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণ, জোর করে আটকে রাখা-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিস। দেড় বছর ধরে বিয়ের মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমেছে কলকাতা পুলিস। এনিয়ে বউবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন এক তরুণী। তবে নওশাদের দাবি, রাজনৈতিক ভাবে অপদস্থ করা হচ্ছে। পুলিসের নোটিস পেলে উত্তর দেব।
অভিযাগকারীনি তরুণীর বক্তব্য, বছর দুয়েক আগে নওশাদ সিদ্দিকির সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয় বন্ধুবান্ধবদের মারফত। এরপর দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়। পরে সেই বন্ধুত্ব অনকেটাই গাঢ় হয়। গত দেড় বছরে বিভিন্ন সময়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন নওশাদ সিদ্দিকি। গত মাসের ২১ ও ২২ তারিখে তাঁকে বিয়ে করবেন বলে জানান নওশাদ। সেইমতো তাঁকে আসতেও বলা হয়। সেই কথা মতো তিনি জেলা থেকে কলকাতায় আসছিলেন। কিন্তু মাঝপথে তিনি দেখেন তাঁর ফোন ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। পরে নওশাদ সিদ্দিকির তরফ থেকে তাঁকে জানানো হয় তিনি তাঁকে বিয়ে করতে পারবেন না। এরপর বহুবার চেষ্টা করেও নওশাদ সিদ্দিকির সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করতে পারেননি।
পুলিসকে ওই তরুণী জানিয়েছেন, বহুদিন ধরেই নওশাদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ রয়েছে। এর মধ্যে একাধিকবার তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে। ওইসব অভিযোগ নিয়ে তিনি নিউটাউন থানা, বিধানসভার স্পিকার, মহিলা কমিশনে একটি চিঠি পাঠান। এরপর গত ৩ জুলাই মেল করে ওইসব জায়গায় ফের বিষয়টি জানান। এরপরই গতকাল তাকে নিউটাউন থানায় যেতে বলা হয়। সেখানে গিয়ে তিনি লিখিত অভিযাগ দায়ের করেন। বছর দেড়েক আগে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁকে বউবাজার এলাকায় ধর্ষণ করা হয় বলে তরুণীর অভিযোগ। তাই নিউটাউন থানায় দায়ের কথা অভিযোগ পাঠিয়ে দেওয়া হয় বউবাজারে। সেখানেই তরুণীর বয়ানের ভিত্তিতে নওশাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস, ব্ল্যাক মেলিংয়ের মামলা রুজু হয়। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ওই তরুণীর মেডিক্যাল টেস্ট করা হয়েছে।
ওই তরুণী সংবাদমাধ্যমে বলেন, নওশাদ সিদ্দিকির বিরুদ্ধে আমি অভিযোগ এনেছি। গোটা বিষয়টা আগে থেকেই চলছিল। তার মধ্যে ভোট চলে এসেছে। এটা নিয়ে একেবারেই রাজনীতি করতে চাই না। কারণ এটা ব্য়ক্তিগত বিষয়। রাজনীতি করতে গেল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চলে যেতাম। আমার ফোন ফরেন্সিকে রয়েছে। মেডিক্য়াল টেস্ট হয়েছে। যা কিছু প্রমাণ আদালতে দেব। যে পাপটা করেছে সে নিজে জানে সে কী করেছে।
এদিকে, গুরুতর ওই অভিযোগ নিয়ে নওশাদ সিদ্দিকি বলেন, আমার বিরুদ্ধে ঠিক কী অভিযোগ করা হয়েছে তা এখনও জানতে পারিনি। পুলিসের কোনও নোটিস এসে পৌঁছায়নি। নোটিস আসুক। এনিয়ে অবশ্যই বলব। গোটা বিষয়টি নিয়ে সবার সন্দেহ হচ্ছে। বিগত দিনে আমাকে রাজনৈতিকভাবে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা হয়েছে। কখনও খুনের অভিযোগ, কখনও খুনের চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে আমার বিরুদ্ধে। তার পরেও আমি টিকে রয়েছি। ওই তরুণীর যদি অভিযোগ থাকতো তাহলে তো উনি একা আসতে পারতেন। তা না করে তৃণমূলের নেতাদের নিয়ে আসছেন।
উল্লেখ্য, নিউটাউন থানায় ওই তরুণী গেলে প্রথম একটি জিরো এফআইআর রেজিস্টার করে পুলিস। পরে তাঁকে বউবাজার থানায় নিয়ে যায়। জোর করে আটকে রাখা, বিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণ, ভয় দেখানোর অভিযোগ করা হয়েছে। এনিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।