বিহারের পুনরাবৃত্তি হল না ওড়িশায়। দেড় দশক পরে সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের দল বিজেডির সঙ্গে আসন রফা নিয়ে বিজেপি দফায় দফায় আলোচনা চালালেও তা ফলপ্রসূ হয়নি। সে রাজ্যে আসন্ন লোকসভা এবং বিধানসভা ভোটে একাই লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দল।
শুক্রবার ওড়িশার বিজেপি সভাপতি মনমোহন শ্যামল এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘‘আমরা একক ভাবে রাজ্যের ২১টি লোকসভা এবং ১৪৭টি বিধানসভা কেন্দ্রে লড়ব এবং জিতব।’’ বিজেডির একটি সূত্র জানাচ্ছে, বিহারের মতোই ওড়িশায় বেশি সংখ্যক লোকসভা আসনে লড়তে চেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু নবীন রাজি হননি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডিইউ প্রধান নীতীশ কুমারের পথে হাঁটতে।
ওই সূত্রের দাবি, লোকসভার বেশি আসনের বিনিময়ে বিজেপি বিধানসভায় দুই-তৃতীয়াংশ আসন ছাড়ার প্রস্তাব দিয়েও নবীনকে রাজি করাতে পারেনি। বর্তমানে ওই রাজ্যে বিজেপির আট সাংসদ ও ২৩ জন বিধায়ক রয়েছেন। সেখানে লোকসভায় বিজেডির আসন সংখ্যা ১২। বিধানসভায় তাদের আসন সংখ্যা ১১২। ফলে সংখ্যার দিক থেকে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে নবীনের দল। বিজেডি নেতৃত্ব আসন সমঝোতা সংক্রান্ত আলোচনায় লোকসভায় বিজেপিকে আটটি এবং বিধানসভায় ৩০টির বেশি আসন ছাড়তে রাজি না হওয়ায় আলোচনা ভেস্তে যায়।
অটলবিহারী বাজপেয়ীয় জমানা থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র সদস্য ছিল বিজেডি। কিন্তু সে বছর কন্ধমাল জেলায় গোষ্ঠীহিংসার ঘটনায় হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলিকে দুষে বিজেপি-সঙ্গ ছেড়েছিলেন নবীন। যদিও তাতে তাঁর ক্ষমতায় ফেরা আটকায়নি। অন্য দিকে, কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে ওড়িশায় প্রধান বিরোধী দল হয়ে উঠেছিল বিজেপি।
বিজেপির একটি সূত্রের খবর, নবীনের হাত ধরার বিষয়ে ওড়িশার বিজেপি নেতাদের একাংশের আপত্তি থাকলেও ‘মিশন ৩৭০’ সফল করার উদ্দেশ্যেই জোটের ভাবনাচিন্তা শুরু করেছেন মোদী, অমিত শাহেরা। চলতি মাসের গোড়ায় বিজেডির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) প্রকাশ দাস দিল্লি গিয়ে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে এক দফা আলোচনা করেন বলেও সূত্রের খবর। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বিজেপি লোকসভা ভোটের জন্য এখনও পর্যন্ত চার দফায় প্রায় তিনশো আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করলেও সেই তালিকায় নেই ওড়িশার কোনও কেন্দ্র।