নবান্ন অভিযান: প্রতিবাদের জায়গা দেখতে গিয়ে হেনস্থা! পুলিশের দিকে আঙুল যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের

নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে তারা। মঙ্গলবারের সেই কর্মসূচির জন্য প্রতিবাদের জায়গা দেখতে এসে হেনস্থা হতে হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের সদস্যরা। অভিযোগ, পুলিশ গলা ধাক্কা দিয়ে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের সভাপতি ভাস্কর ঘোষ এবং অন্যদের বার করে দিয়েছে। সোমবার রাজ্য পুলিশ সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দিয়েছে, মঙ্গলবার দু’টি সংগঠন নবান্ন অভিযানের জন্য যে অনুমতি চেয়েছিল, তা দেওয়া হয়নি। এই অভিযান ‘বেআইনি’ বলেও জানিয়েছে তারা। যদিও ভাস্করের দাবি, এই অভিযান ‘বেআইনি’ নয়।

ওই মঞ্চের সদস্যদের দাবি, সোমবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ ভাস্কর এবং কয়েক জন সদস্য নবান্নের কাছে উপস্থিত হন। ঘটনাস্থলে আগে থেকেই বিরাট পুলিশ বাহিনী এবং র‍্যাফ মোতায়েন ছিল। ভাস্করের অভিযোগ, পুলিশ ‘গলাধাক্কা’ দিয়ে তাঁদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয় তীব্র বাদানুবাদ। যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ ছাড়াও বিভিন্ন চাকরি প্রার্থীদের সংগঠন এবং আদিবাসীদের সংগঠন তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন বলেও দাবি ভাস্করের। যদি পুলিশ অনুমতি না দেয়, তবে তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন বলেও জানান। পুলিশি সক্রিয়তাকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘এই ধরনের সক্রিয়তা যদি আগে দেখা যেত, তা হলে আরজি কর হাসপাতালে নির্যাতিতা খুন হতেন না।’’

সোমবার সকালে রাজ্য পুলিশ জানায়, ওই মিছিলের জন্য কোনও অনুমতি তাদের থেকে নেওয়া হয়নি। রাজ্য পুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার এবং এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) মনোজ বর্মা সাংবাদিক বৈঠক করে সে কথা জানিয়েছিলেন। এই মর্মে মঙ্গলবারের মিছিলকে ‘অবৈধ’ বা ‘বেআইনি’ বলে মন্তব্য করে তাঁরা জানিয়েছিলেন, নবান্নের কাছে ওই মিছিলের অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, সেখানে নতুন ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা আইনের ১৬৩ ধারা (পুরনো ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারা) জারি থাকে। অর্থাৎ সেখানে পাঁচ বা তাঁর বেশি জনের জমায়েত বেআইনি।

সোমবার সকালের সেই সাংবাদিক বৈঠকের পরেই তাঁদের কাছে দু’টি ইমেল এসে পৌঁছয় বলে জানিয়েছেন সুপ্রতিম। এর মধ্যে একটি ইমেল পাঠিয়েছে ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’। কিন্তু তারা কোনও অনুমতি চায়নি। তারা শুধু পুলিশকে জানিয়েছে যে, মঙ্গলবার একটি অরাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে চলেছে তারা। আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে নবান্নে অভিযান যাবে ‘ছাত্র সমাজ’। পুলিশ জানিয়েছে, ছাত্র সমাজের ওই ইমেলে অনুমতি চাওয়া হয়নি। পাশাপাশি, কলকাতা হাই কোর্টের নিয়ম মেনে কর্মসূচি সংক্রান্ত যে সমস্ত জরুরি তথ্য দেওয়ার প্রয়োজন হয়, যেমন তাঁরা কোন পথে এগোবেন, কী কর্মসূচি , কোথায় অবস্থান করবেন, সেই সব তথ্যও জানানো হয়নি। আর সে জন্যই ওই অনুমতি বাতিল করা হয়েছে।

পুলিশের দাবি, দ্বিতীয় ইমেলটি এসেছিল সংগ্রামী যৌথমঞ্চের তরফে। সেই ইমেলে নিয়ম মেনে অনুমতি চাওয়া হলেও তাঁদের অনুমতি দেওয়া হয়নি। কারণ নবান্নের কাছে ওই ধরনের কর্মসূচির অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। এই আবহে কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার তারা প্রস্তুত থাকছে। প্রয়োজন বুঝে বদলানো হবে সিদ্ধান্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.