নবান্ন অভিযান নিয়ে এ বার রাজ্যকে দুষলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তিনি জানান, বিচার চেয়ে পথে নেমেছিলেন সাধারণ মানুষ। কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা হাতে নেননি। তার পরেও কলকাতার রাস্তায় যা হয়েছে, তা গণতান্ত্রিক ভাবে জয়ী সরকারের কাছ থেকে আশা করা যায় না। অভিযানের সময় জাতীয় পতাকার অবমাননা হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি। একই সঙ্গে এ-ও জানিয়েছেন, এটা আসলে ‘শেষের শুরু’।
রাজ্যপাল মঙ্গলবার বলেন, ‘‘কলকাতার রাস্তায় যা হল, তা গণতান্ত্রিক ভাবে জিতে আসা সরকারের কাছ থেকে আসা করা যায় না। বিচার চেয়ে পথে নামা প্রতিবাদীরা কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা নেননি। জাতীয় পতাকা নিয়েছিলেন। তাঁদের আক্রমণ করা হল। নিরীহ প্রতিবাদীদের মারধর করা হল।’’ তাঁর মতে, এ ভাবে আসলে জাতীয় পতাকার ‘অবমাননা’ করা হয়েছে। ‘জাতীয় আবেগের অপমান’ হয়েছে। তিনি এ-ও দাবি করেছেন, এ ভাবে ‘দেশের অবমাননা’ হয়েছে। কেন এ রকম হল, সেই প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল।
রাজ্যপাল জানান, মঙ্গলবার মানুষ পথে নেমেছিলেন আরজি কর হাসপাতালে নির্যাতিতার বিচার চেয়ে। কিন্তু পরিবর্তে কী পেয়েছেন তাঁরা, সেই প্রশ্ন তুলে জবাব দিয়েছেন নিজেই। রাজ্যপালের কথায়, ‘‘মানুষ কী পেল বিচার চেয়ে? লাঠিচার্জ, মারধর, কাঁদানে গ্যাস, জলকামান! মনে রাখতে হবে, বিচার চেয়ে এই দাবি উঠে এসেছে কবিগুরুর বাংলায়। ‘চিত্ত যেথা ভয়শূন্য’। নেতাজি ‘দিল্লি চলো’ বলেছিলেন। এখানে বাংলার মানুষ ‘নবান্ন চলো’ বলেছিল।’’ তাঁদের বিচার দেওয়ার দাবি তুলেছেন রাজ্যপাল।
এই প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণের কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণের প্রসঙ্গ তুলে তিনি জানান, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। তাঁর কথায়, ‘‘এটা শেষের শুরু। তা-ই হওয়া উচিত। বিদায় হিংসা, খুন। বাংলা হিংসা মুক্ত হওয়া উচিত।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এখানে সরকার অপরাধীদের রক্ষা করছে। এই খুনের খেলা বন্ধ হোক।’’ মুখ্যমন্ত্রীকে ‘দাম চোকাতে’ হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি এ-ও জানিয়েছেন, মানুষ বিচার চাইছেন এবং তাঁরা তা পাবেন। মানুষের স্বর আসলে ‘ঈশ্বরের স্বর’। জঙ্গলরাজ, গুণ্ডারাজ, খুনরাজ বন্ধ করতে হবে। বাংলা শান্তির স্বর্গ হবে।