মুখ্যমন্ত্রীকে আইন মেনে চলতে বললেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। টুইটারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে নাম উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ‘আপনাকে আমার অনুরোধ, সংবিধান মেনে চলুন। আইন মেনে চলুন’।
সোমবার সকালে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, বিধায়ক মদন মিত্র এবং রাজনৈতিক নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নারদা কেলেঙ্কারির তদন্তে বিনা নোটিশে তুলে এনে গ্রেফতার করে সিবিআই। এরপরই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় সিবিআইয়ের দফতর নিজাম প্যালেস চত্বর। মমতা নিজে সেখানে পৌঁছে যান। তাঁকেও গ্রেফতার করা হোক বলে দাবি তোলেন। জানিয়ে দেন, যতক্ষণ না তাঁকেও গ্রেফতার করা হচ্ছে তিনি কোথাও যাবেন না। এরপরই একের পর এক টুইটে মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যের প্রশাসনের সমালোচনা করেন রাজ্যপাল।
নিজাম প্যালেসের অশান্তির জন্য কার্যত পুলিশের নিষ্ক্রিয় ভূমিকাকেই ‘দায়ী’ করে রাজ্যাপাল লেখেন, ‘রাজ্যের এই পরিস্থিতি দেখে উদ্বিগ্ন, মুখ্যমন্ত্রীকে আমি বলব, দয়া করে সংবিধান এবং আইন মেনে চলুন। আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে অনুরোধ করব পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ, কলকাতা পুলিশ এবং রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরকেও। এটা খুবই দুঃখজনক বিষয় যে, পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে দেখেও প্রশাসন এখনও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি’।
সোমবার রাজ্যের মন্ত্রী-বিধায়কদের গ্রেফতারির পর নিজাম প্যালেসের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা।নিজাম প্যালেসের সামনের রাস্তায় সেই বিক্ষোভ পরে ধস্তাধস্তির পর্যায়ে পৌঁছয়। কেন্দ্রীয় বাহিনী ও তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। বিক্ষোভকারীরা ইট-পাথর ছুড়তে শুরু করেন বাহিনীকে লক্ষ্য করে।
রাজ্যপাল পরপর তিনটি টুইটে এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন মুখ্যমন্ত্রীর। টুইটগুলি শুরু করেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি বার্তা’, বা ‘মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই’ লিখে। নিজাম প্যালেসের ঘটনা নিয়ে সোমবার সকাল থেকে যা চলেছে তাকে ‘সম্পূর্ণ আইন-শৃঙ্খলাহীন পরিস্থিতি’ বলে মন্তব্য করে রাজ্যপাল লিখেছেন, ‘প্রতি মিনিটে অবনতি হচ্ছে পরিস্থিতির। অথচ পুলিশ এবং প্রশাসন নীরব দর্শকের ভূমিকা নিয়েছে, আশা করি এই ধরনের আইন-শৃঙ্খলাহীন পরিস্থিতির পরিণতি কি তা আপনি বোঝেন। এটি আসলে সাংবিধানিক পরিকাঠামোর ব্যর্থতা’।
নিজাম প্যালেস চত্বরে সিবিআই অফিস লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ার ঘটনার কথাও টুইটারে উল্লেখ করেন রাজ্যপাল। তিনি লেখেন, ‘টিভিতে এবং অন্যান্য সংবাদমাধ্যমে এই ঘটনা দেখে আমি তাজ্জব। আমি এ ব্যাপারে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। তিনি দেখুন, কী ভাবে এই সব ঘটনা ঘটতে দেখেও রাজ্য এবং কলকাতা পুলিশ স্রেফ দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। আমার অনুরোধ, রাজ্যে দ্রুত আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখার ব্যবস্থা করুন’।