নিয়োগ দুর্নীতির ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা ছিল রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাকতলার বাড়িটির। বৃহস্পতিবার আদালতে এমন দাবি করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই জানিয়েছে, ওই বাড়ির এক তলায় অফিস চালাতেন পার্থ। আদালতে সিবিআইয়ের আইনজীবী জানিয়েছেন, প্রসন্ন রায়ের মতো ‘মিডলম্যান’দের সঙ্গে নাকতলার বাড়ির অফিসেই বৈঠক করতেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, মিডলম্যানেরা যে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা তুলতেন, তাঁদের নাম স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর তৎকালীন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্যের কাছে পাঠাতেন পার্থ। সুবীরেশকে সেই কারণেই নিয়ম ভেঙে নিয়োগ করা হয়েছিল বলেও আদালতে দাবি করেছে সিবিআই।
বৃহস্পতিবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিশেষ সিবিআই আদালতে হাজির করানো হয় পার্থকে। আদালতে পার্থের আইনজীবীর সঙ্গে সিবিআইয়ের আইনজীবীর দীর্ঘ সওয়াল-জবাব পর্ব চলে। পার্থের আইনজীবী তাঁর মক্কেলের জামিনের আর্জি জানিয়ে আদালতে সওয়াল করে বলেন, “এসএসসি একটি স্বশাসিত সংস্থা। তাই কোনও নিয়োগের ক্ষেত্রেই মন্ত্রীর কোনও ভূমিকা ছিল না।” সিবিআইয়ের অবশ্য দাবি, নিয়োগের ক্ষেত্রে ‘পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র’ হয়েছে। পার্থকে জামিন দিলে তথ্যপ্রমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আদালতে আশঙ্কাপ্রকাশ করে তারা। সুবীরেশের নিয়োগ প্রসঙ্গে সিবিআইয়ের দাবি উড়িয়ে পার্থের আইনজীবী অবশ্য জানান, পার্থ শিক্ষামন্ত্রী হিসাবে নিযুক্ত হওয়ার আগেই এসএসসি চেয়ারম্যান হিসাবে নিযুক্ত হন সুবীরেশ। তাই বিশেষ প্রয়োজনে সুবীরেশকে নিয়োগ করার যুক্তি এখানে খাটে না বলে দাবি করা হয়েছে পার্থের তরফে।
অন্য দিকে, পার্থ বৃহস্পতিবার বিচারককে জানিয়েছেন, তাঁর শরীর ভাল যাচ্ছে না। আদালতে এ কথা জানিয়ে সহকারী (অ্যাসিন্ট্যান্ট) রাখার আর্জিও জানিয়েছেন তিনি। বিচারক যদিও বিষয়টি ‘জেল কর্তৃপক্ষ ঠিক করবেন’ বলে জানিয়েছেন। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিচারকের কাছে পার্থ বলেন, “আমার শরীর ভাল যাচ্ছে না। অ্যাসিন্ট্যান্ট থাকলে ভাল হয়।” পার্থের আর্জি শুনে বিচারক বলেন, “অ্যাসিন্ট্যান্ট রাখার বিষয়টি জেল কর্তৃপক্ষ ঠিক করবেন।” প্রত্যুত্তরে পার্থ বলেন, “আপনি বলে দিলে ঠিক হয়ে যাবে।” পার্থের জামিনের আর্জি অবশ্য খারিজ করে দেন বিচারক।