ধর্ষণের বিচার চেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। রিপোর্টও লিখিয়েছিলেন নির্যাতিতা। কিন্তু পুলিশ সেই অভিযোগে আমল দেয়নি। ঘটনার ১৫ দিন কেটে গেলেও ধরা পড়েনি অভিযুক্ত। প্রতিবাদে তাই প্রকাশ্যে লজ্জা বিসর্জন দিলেন তিনি। খোলা রাস্তায় দাঁড়িয়ে শরীর থেকে খুলে ফেললেন একের পর এক পোশাক। নগ্ন হয়ে দাবি করলেন সুবিচারের। চিৎকার করে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার জবাব চাইলেন। রবিবার উত্তরপ্রদেশের আগরায় এই ঘটনার তিন দিনের মাথায় পুলিশ গ্রেফতার করল অভিযুক্তকে।
গত ১০ অগস্ট, অর্থাৎ বাংলায় আরজি করের ঘটনার ঠিক পরের দিন ঘটনাটি ঘটে উত্তরপ্রদেশে। নির্যাতিতার বয়স ২০। তিনি লখনউয়ের বাসিন্দা। গত ১১ অগস্ট তিনি বিষয়টি পুলিশকে জানান এবং ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশকে নির্যাতিতা জানিয়েছিলেন, ১০ অগস্ট সন্ধ্যায় একটি চলন্ত গাড়ির ভিতরে তাঁকে ধর্ষণ করেন অভিযুক্ত। যিনি জম্মু আইআইটির এক জন স্নাতকোত্তর ছাত্র। বয়স ২২। জম্মুতে যাওয়ার আগে আগরায় থাকতেন তিনি। সেখানকার কলেজ থেকে স্নাতক হন। কিন্তু পুলিশ প্রাথমিক তদন্তের পরে পাল্টা তাঁকে বলে, যে সময় ঘটনাটি ঘটেছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন, সেই সময় জম্মুতে ছিলেন অভিযুক্ত।
বিস্মিত ওই তরুণী এর পরে বহু বার থানায় গিয়ে পদস্থ অফিসারের সঙ্গে দেখা করে তাঁর অভিযোগ জানিয়েছেন। তবে অভিযোগ, তাতে লাভ হয়নি কিছু। গত প্রায় ২০ দিন ধরে যখন গোটা দেশে ধর্ষণ বিরোধী প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে, তখন অভিযুক্তকে শুধু গ্রেফতার করাতে চেয়েই বার বার থানায় ঘুরেছেন ওই তরুণী। শেষে হতাশ হয়েই তিনি প্রকাশ্যে প্রতিবাদ জানানোর সিদ্ধান্ত নেন।
গত রবিবার দুপুরে আগ্রার একটি ব্যস্ত রাস্তায় আচমকাই ওই তরুণী নিজের পোশাক খুলে ফেলে পুলিশ বিরোধী স্লোগান দিতে শুরু করেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন জানিয়েছেন, তরুণীকে ওই অবস্থায় দেখে সঙ্গে সঙ্গে সাহায্যে এগিয়ে আসেন দু’জন মহিলা। দ্রুত কাপড় দিয়ে ওই তরুণীর লজ্জা নিবারণ করেন তাঁরা। নিয়ে যান কাছের একটি ক্লিনিকে। খবর দেওয়া হয় পুলিশকেও। এর পরই পুলিশ সতর্ক হয়। প্রথমে ওই তরুণীকে একটি মানসিক চিকিৎসার হাসপাতালে নিয়ে যায় তারা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওই তরুণীকে তিন দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। কিন্তু কোনও অস্বাভাবিক কিছু দেখতে পাননি তাঁরা। মঙ্গলবারই ওই তরুণীর পরিবারকে ডেকে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় তাঁকে। পরে পুলিশ মঙ্গলবারই গ্রেফতার করে অভিযুক্ত আইআইটি পড়ুয়াকেও।