আন্তর্জাতিক মহলে সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে চিন। একদিকে হংকং নিয়ে আমেরিকার চাপ দিচ্ছে আমেরিকা। রাষ্ট্রপুঞ্জে হংকং নিয়ে প্রথমবার সরব হল ভারতও। এমন পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিনের বন্ধু মায়ানমারও বেজিংয়ের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার অভিযোগ জানাল। সম্প্রতি রাশিয়ার এক টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মায়ানমারের (Myanmar) সিনিয়র জেনারেল মিন আং হ্যায়েং অভিযোগ করে বলেন, মায়ানমারে সন্ত্রাসবাদি গোষ্ঠীকে শক্তিশালী শক্তি (Strong Force) মদত দিচ্ছে। একইসঙ্গে তাদের উচিৎ শিক্ষা দিতে আন্তর্জাতিক সাহায্যও চেয়েছেন তিনি। যা দেখে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের দাবি, শক্তিশালী শক্তি বলতে মায়ানমারের উত্তরদিকের রাষ্ট্র চিনকেই (China) ইঙ্গিত করেছেন সিনিয়র জেনারেল।
এ প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মায়ানমার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জ মিন তুন বলেন, সেনা প্রধান রাখাইন প্রদেশে সক্রিয় জঙ্গিগোষ্ঠী আরাকান আর্মি (Arakan Army অথবা AA) ও আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (ARSA) কথা বলেছেন। প্রসঙ্গত, রাখাইন প্রদেশ চিন ও মায়ানমার সীমান্তে অবস্থিত। সারা বছরই এই এলাকা উত্তপ্ত থাকে। মায়ানমারের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, বিদেশি শক্তি এই সন্ত্রাসবাদী সংগঠনকে হাতিয়ার সরবরাহ করে। জানা গিয়েছে, রকেট লঞ্চার, সারফেস টু এয়ার মিসাইল উদ্ধার হয়েছে। যার এক একটির দাম ৯০ হাজার মার্কিন ডলার। আর এই সবকটি অস্ত্রই চিনে তৈরি হয়েছে।
চিনের সঙ্গে মায়ানমারের বরাবরই মজবুত সম্পর্ক। এমন পরিস্থিতিতে সেই চিনের বিরুদ্ধে জঙ্গি সংগঠনগুলিকে হাতিয়ার জোগানোর অভিযোগ তোলা নিসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। তবে এটা প্রথমবার নয়। এর আগে ২০১৯ সালে চিনের বিরুদ্ধে অস্ত্র জোগানোর অভিযোগ তুলেছিল মায়ানমার। সেইসময় সে দেশে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনকে ক্ষেপমাস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ উঠেছিল। ভারত-চিন স্নায়ুযুদ্ধের মধ্যে মায়ানমারের এই অভিযোগ কেন তাৎপর্যপূর্ণ?
এটা প্রথমবার নয়। এর আগে ২০১৯ সালে চিনের বিরুদ্ধে অস্ত্র জোগানোর অভিযোগ তুলেছিল মায়ানমার। সেইসময় সে দেশে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনকে ক্ষেপমাস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ উঠেছিল। ভারত-চিন স্নায়ুযুদ্ধের মধ্যে মায়ানমারের এই অভিযোগ কেন তাৎপর্যপূর্ণ?
ভারত স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই বৃহত্তর ‘নাগালিম’ বা পৃথক নাগা দেশ গঠনের জন্য লড়াই করছে NSCN-এর মতো বিচ্ছিন্নতাবাদী নাগা সংগঠনগুলি। মায়ানমারে ঘাঁটি গেরেই ভারতে নাশকতামূলক কার্যকলাপ সংগঠিত করে তারা। ওই জঙ্গিগোষ্ঠীগুলিকে বরাবরই চিন অস্ত্র জোগান দিয়ে এসেছে বলে নয়াদিল্লির অভিযোগ। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, মায়ানমারের কাচিন প্রদেশে নাগা জনগোষ্ঠীর আধিপত্য রয়েছে। ফলে কাচিন-সহ একাধিক প্রদেশকে ‘নাগালিম’-এর অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। পাশাপাশি, ভারতের সঙ্গে সামরিক চুক্তি করায়, নাইপিদাওকে শিক্ষা দিতে ‘আরাকান সালভেশন আর্মি’ নামের জঙ্গি গোষ্ঠীকেও হাতিয়ার যোগাচ্ছে চিন বলে অভিযোগ। এবার সেই সন্ত্রাসবাদী সংগঠনকে অস্ত্র জোগানোর অভিযোগ আনল মায়ানমারও। পাশাপাশি তাদের উপযুক্ত শিক্ষা দিতে আন্তর্জাতিক সাহায্য চাইল মায়ানমার। সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে নিসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।