তাঁর অনুমতি ছাড়া কী ভাবে তাঁর ছবি প্রকাশ্যে আনা হল? রাজভবনের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আনন্দবাজার অনলাইনে প্রশ্ন তুললেন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ আনা রাজভবনের সেই অস্থায়ী কর্মী। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘কী ভাবে রাজ্যপাল আমার অনুমতি ছাড়া আমার ফুটেজ প্রকাশ করলেন? আবার তো উনি নতুন করে অপরাধ করলেন।’’
রাজভবনের তরফে বৃহস্পতিবার ঘটনার দিনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ প্রকাশ করা হয়েছে। রাজভবন চত্বরে গিয়ে আগ্রহীরা সেই ফুটেজ দেখে এসেছেন। তার কিছু কিছু দৃশ্য সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিতও হয়েছে। যা দেখতে পান অভিযোগকারিণীও। এর পর আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যপাল মহাশয় নিজে এ রকম একটা কুরুচিকর কাজ করলেন! এখন আবার নিজের দোষ ঢাকতে হাস্যকর নাটক মঞ্চস্থ করলেন। সেটা করতে গিয়ে উনি আমার অনুমতি ছাড়া আমার ফুটেজ প্রকাশ্যে আনলেন। আমি জানতাম ভারতীয় আইন অনুযায়ী, অভিযোগকারিণীর পরিচয় গোপন রাখা উচিত। উনি প্রথম থেকেই এই তদন্তে অসহযোগিতা করছেন। এর আগেও উনি অপরাধ করেছেন। এখন আবার আমার অনুমতি ছাড়া ফুটেজ ভাইরাল করে নতুন করে অপরাধ করলেন। আমি এ নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।’’
রাজভবন থেকে ১ ঘণ্টা ১৯ মিনিটের সিসিটিভি ফুটেজ দেখানো হয়েছে। বুধবারই জানানো হয়েছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর পুলিশ ছাড়া রাজ্যের যে কোনও বাসিন্দা ওই ফুটেজ দেখতে পারবেন। রাজভবনের নর্থ গেটের সামনে বসানো দু’টি ক্যামেরার ফুটেজ দেখানো হয়। সেখানে অভিযোগকারী মহিলাকে রাজভবনের দিক থেকে বেরিয়ে পুলিশ আউটপোস্টের দিকে হন্তদন্ত হয়ে যেতে দেখা গিয়েছে। কিছু ক্ষণ পর আউটপোস্ট থেকে বেরিয়ে পাশের ঘরে যান তিনি।
শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠলে অভিযোগকারিণীর নাম, পরিচয় বা ছবি, কোনওটাই প্রকাশ করা যায় না। এ ক্ষেত্রে সেই নিয়ম রাজ্যপাল লঙ্ঘন করেছেন বলে অভিযোগ মহিলার। তিনি জানিয়েছেন, গোটা ঘটনায় প্রথম থেকেই পুলিশ তাঁর পাশে আছে। তাই এ ক্ষেত্রেও পুলিশের পরামর্শ নেবেন।
ঠিক কী ঘটেছিল সে দিন?
আনন্দবাজার অনলাইনকে মহিলা বলেন, ‘‘রাজভবনের উপরে ঘটনাটি ঘটেছিল। সেখান থেকে নেমে আমি সেক্রেটারির ঘরে গিয়েছিলাম। তার পর আউটপোস্টে যাই। প্রথম থেকেই উনি (রাজ্যপাল) তদন্তে অসহযোগিতা করছেন। উনি যদি সৎ হতেন, প্রথম দিনেই ফুটেজ পুলিশকে দিয়ে দিতেন। আসলে নিজের পদে থেকে উনি যা খুশি তাই করে চলেছেন। নিজের অসুস্থ মস্তিষ্কের পরিচয় দিচ্ছেন। পুলিশ আমাকে সাহায্য করছে। কিন্তু আমি এবং আমার পরিবার মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত।’’
তবে ভয় পাচ্ছেন না বলেই জানিয়েছেন অভিযোগকারিণী। বলেন, ‘‘আমি ভয় পাচ্ছি না। শুধু আমার হতাশ লাগছে, যে এটার কোনও সমাধান হচ্ছে না।’’