মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা থানার রেল কলোনিতে উদ্ধার নাবালিকার দেহ। গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে ক্ষোভ। স্থানীয়দের দাবি, সকাল থেকেই নিখোঁজ ছিল ওই নাবালিকা। পরে স্থানীয় এক ব্যক্তির ঘর থেকে উদ্ধার হয় বস্তা বন্দি দেহ। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। ঘটনার খবর পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন গ্রামের মানুষ।
ফরাক্কা ব্লকের দু’ নম্বর নিশিন্দ্রা কলোনি সুভাষপল্লির বাসিন্দা ওই নাবালিকা। দুর্গাপুজো উপলক্ষে বাড়ি থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে পলাশি রেল কলোনি পাড়ায় দাদুর বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিল সে। তার দাদুর বাড়ির কাছেই থাকে দীনবন্ধু হালদার নামে ওই ব্যক্তি, যে এলাকায় দীনু নামে পরিচিত। সকালে গ্রামের মাঠে বন্ধুদের সঙ্গে খেলছিল ওই শিশু। অভিযোগ, তখন ওই ব্যক্তি শিশুকে পুজোর ফুল তুলে দেওয়ার বাহানায় বাড়ি নিয়ে যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই শিশুকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে তার উপর পৈশাচিক নির্যাতন চালায় দীনু। তারপরে তাকে খুন করে শিশুর দেহ বস্তাবন্দি করে বাড়ির আলমারিতে লুকিয়ে রাখে। ওই শিশু বাড়ি না ফেরা বাড়ির লোকজন চিন্তিত হয়ে পড়েন। মেয়েকে খুঁজতে তাঁরা বাইরে বের হন। মেয়ে বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হলে তাঁরা জানতে পারেন, দীনু নামে ওই ব্যক্তি মেয়েকে সঙ্গে করে বাড়ি নিয়ে গেছে।
এই বিষয়ে জানতে পেরে অভিযুক্তের বাড়িতে যান শিশুর আত্মীয়রা। সেই সময়ে দীনু বাড়িতেই ছিল। মেয়ে কোথায়? জানতে চান নাবালিকার আত্মীয়রা। উত্তর দিতে গিয়ে ওই ব্যক্তির কথাবার্তায় অসঙ্গতি উঠে আসে। শিশুর পরিবার বুঝতে পারে দীনু মিথ্যে বলছে। তাকে চাপ দিতে থাকে। পরিবারে চাপের মুখে পড়ে খুনের কথা স্বীকার করে নেয় অভিযুক্ত দীনু হালদার। এরপরেই ক্ষোভের মুখে পড়ে অভিযুক্ত। বাড়ি থেকে তাকে টেনে বের করে গণধোলাই দেয় স্থানীয়রা। অভিযুক্তের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
মৃত নাবালিকার দাদু বাঞ্ছা হালদার জানান, “সকাল ন’ টা থেকে নাতনি বাড়ির সামনে কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে খেলা করছিল। দুপুর বারোটার পর থেকে তাকে আর খুঁজে পাচ্ছিলাম না। এর পর নাতনির বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি দীনবন্ধু নাতনিকে ডেকে নিয়ে গিয়েছে। দীনবন্ধুর বাড়িতে তল্লাশি চালাতেই বাড়ির এক কোণে একটি বস্তার মধ্যে থেকে নাতনির প্রাণহীন দেহ দেখতে পাই। আমি নিশ্চিত দীনবন্ধুই আমার নাতনিকে খুন করেছে। কিন্তু কী কারণে এই খুন তা জানি না। আমাদের সঙ্গে দীনবন্ধুর কোনও অশান্তি ছিল না।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নাবালিকার দেহ ভিজে অবস্থায় ছিল। উর্ধাঙ্গে বস্ত্র ছিল না। অনেকের অনুমান ওই নাবালিকাকে জলে ডুবিয়ে খুন করা হয়ে থাকতে পারে।” এ প্রসঙ্গে জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার পুলিস সুপার আনন্দ রায় জানান, “আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নাবালিকার মৃত্যুর সঠিক কারণ অনুসন্ধানে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠান হয়েছে।