রাজ্যে বেড়েছে করোনাভাইরাস সংক্রমণ। বিয়েবাড়িতে আরও বেশি সংখ্যক মানুষের প্রবেশের অনুমতি দিল রাজ্য সরকার। সেইসঙ্গে নিয়ম মেনে খোলা জায়গায় মেলা আয়োজনের ছাড়ও দেওয়া হয়েছে।
শনিবার নবান্নের তরফে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে, আপাতত রাজ্যে যে সব বিধিনিষেধ কার্যকর আছে, তা আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বহাল থাকবে। তবে বিয়েবাড়িতে উপস্থিতির ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। এতদিনে বিয়ের অনুষ্ঠানে সর্বাধিক ৫০ জন উপস্থিত থাকতে পারতেন। এবার সেই সর্বোচ্চসীমা বাড়িয়ে ২০০ করা হয়েছে। রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছে, একইসময় বিয়েবাড়িতে সর্বোচ্চ ২০০ জন বা কোনও হলের মোট ধারণ ক্ষমতার ৫০ শতাংশ মানুষ (যেটা কম হবে, সেটা) থাকতে পারবেন। অন্যদিকে, খোলা জায়গায় নিয়ম মেনে মেলা আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
যদিও সেই বিধিনিষেধে ছাড় দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। গত ২ জানুয়ারি যখন রাজ্যে বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছিল, সেদিন দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬,১৫৩। সংক্রমণের হার ছিল ১৫.৯৩ শতাংশ। শুক্রবারের (১৪ জানুয়ারি) বুলেটিন অনুযায়ী, দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২,৬৪৫। সংক্রমণের হার ৩১ শতাংশের বেশি। তাহলে কোন যুক্তিতে বিয়েবাড়িতে এতটা ছাড় দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
কী কী বিধিনিষেধ জারি থাকবে?
১) সমস্ত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। কোনও পঠন-পাঠন হবে না। স্কুলের প্রশাসনের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁরা স্কুলে যেতে পারবেন। তবে দৈনিক উপস্থিতি ৫০ শতাংশে বেঁধে রাখতে হবে।
২) সরকারি এবং বেসরকারি অফিসে দিনে সর্বাধিক ৫০ শতাংশ কর্মী উপস্থিত থাকতে পারবেন। ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’-এ জোর দিতে হবে।
৩) ৫০ শতাংশ লোক নিয়ে সেলুন, বিউটি পার্লার খোলা যাবে।
৪) বিনোদন পার্ক, চিড়িয়াখানা বন্ধ-সহ যাবতীয় পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
৫) শপিং মল এবং মার্কেট কমপ্লেক্সে সর্বাধিক ৫০ শতাংশ লোক ঢুকতে পারবেন। রাত ১০ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
৬) ৫০ শতাংশ দর্শক নিয়ে সিনেমা হল খোলা রাখা যাবে। রাত ১০ টা পর্যন্ত সিনেমা খোলা রাখার ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে।
৭) রেস্তোরাঁ এবং পানশালায় সর্বাধিক ৫০ শতাংশ লোক ঢুকতে পারবেন। রাত ১০ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
৮) সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সর্বাধিক ৫০ জন উপস্থিত থাকতে পারবেন।
৯) ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে লোকাল ট্রেন চলতে পারে। সন্ধ্যা সাতটার পর সব লোকাল ট্রেন বন্ধ থাকবে। তবে দূরপাল্লার ট্রেন চলবে।
১০) মেট্রো সাধারণ সময় মেনে চলতে পারবে। তবে সর্বাধিক ৫০ শতাংশ যাত্রী উঠতে পারবেন।
১১) হোম ডেলিভারি চালু থাকবে। মেনে চলতে হবে যাবতীয় করোনা বিধি।
১২) রাত্রিকালীন বিধিনিষেধের সময় বাড়ল। রাত ১০ টা থেকে ভোর ৫ টা থেকে পর্যন্ত রাত্রিকালীন বিধিনিষেধ জারি থাকবে। সেই সময় শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা ছাড় পাবেন।