Mohun Bagan | ISL Semifinal: কৃষ্ণ বাঁশি বাজিয়ে কলিঙ্গ জয় ওড়িশার, যুবভারতীতে হাবাসদের অপেক্ষায় অগ্নিপরীক্ষা

মহাযুদ্ধের প্রথম পর্বের হার্ডল টপকাতে পারল না মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট (Mohun Bagan Super Giant)! ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে ওড়িশা এফসি-র কাছে ১-২ হেরে গেল গতবারের চ্য়াম্পিয়নরা (Odisha FC vs Mohun Bagan)। আইএসএল সেমিফাইনালের প্রথম লেগের অ্যাওয়ে ম্যাচ জিতে, ফাইনালের পথে এক পা বাড়িয়ে রাখাই লক্ষ্য় ছিল অ্যান্তোনিও লোপেজ হাবাসের শিষ্য়দের। সেখানে ওড়িশার ঘরের মাঠে হেরে গেল সবুজ-মেরুন। আগামী ২৮ এপ্রিল যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে এই ওড়িশার বিরুদ্ধেই সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগ খেলবে মেরিনার্স। বলে দেওয়ার অপেক্ষা রাখে না যে, হাবাসদের বসতে হবে অগ্নিপরীক্ষায়! কারণ পাঁচদিন পর মোহনবাগানকে জিততে হবে ন্যূনতম দুই গোলের ব্য়বধানেই।

রুদ্ধশ্বাস প্রথমার্ধে দেখেছে তিন গোল। হাবাস মঙ্গল সন্ধ্য়ায় তাঁর প্রথম একাদশ সাজিয়ে ছিলেন বিশাল কাইথ , আনোয়ার আলি, অনিরুদ্ধ থাপা, জনি কাউকো, দিমিত্রি পেত্রাতোস, মনবীর সিং, শুভাশিস বোস, অভিষেক সূর্যবংশী, লিস্টন কোলাসো, হেক্টর ইয়ুস্তে ও আর্মান্দো সাদিকুকে নিয়ে। খেলা শুরুর তিন মিনিটের মধ্য়ে এগিয়ে যায় মোহনবাগান। ২ মিনিট ২৬ সেকেন্ডের মাথায় বাগান সমর্থকদের উচ্ছ্বাসে মাতান মনবীর। পেত্রাতোসের ভাসানো কর্নারে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন ছয় ফুট দুই ইঞ্চির পঞ্জাবের ফরোয়ার্ড। 

গোল হজমের দশ মিনিটের মাথায় ওড়িশা স্পট কিক থেকে গোল করতে যেমন ব্য়র্থ হয়, তেমনই ঘরের দল জোড়া কর্নার নষ্ট করেছে। এক গোলে পিছিয়ে থাকা সের্জিয়ো লোবেরার শিষ্যরা গোলের জন্য় মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন। ১০ মিনিটের মাথায় ওড়িশার দুরন্ত আক্রমণ মোহনবাগান রুখে দিলেও, ঠিক তার পরের মিনিটে আর কিছু করার ছিল না। ওড়িশার স্প্য়ানিশ সেন্টার-ব্য়াক কার্লোস ডেলগাডো আহমেদ জহুর পাস থেকে গোল করে স্কোরলাইন ১-১ করে যান। 

ম্য়াচের ১৪ মিনিটে তোলা ছিল একপ্রস্ত নাটক। ১৪ মিনিটে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে পেনাল্টি দিয়েছিলেন রেফারি। তিনি জানান যে, রয় কৃষ্ণা অফসাইডে ছিলেন। কিন্তু পরে লাইন্সম্য়ানের সঙ্গে আলোচনা করে তিনি বুঝতে পারেন যে, ফিজির স্ট্রাইকার বল ধরার আগে অল্পের জন্য় লাইনের বাইরে ছিলেন। এরপর তিনি সিদ্ধান্ত প্রত্য়াহার করেন। এরপর ১৭ মিনিটে সাদিকুর শট প্রতিহত হয়ে যায়। 

এরপর ধারাবাহিক ভাবে পেত্রাতোস গোলের সুযোগ পেয়েও পারেননি। টাইমলাইন বলছে ১৮, ২৩ ও ৩৩ মিনিটে পেত্রাতোসের গোল করার সুযোগ ছিল। প্রথমবার সরাসরি শট, দ্বিতীয়বার ফ্রি-কিকের সুযোগ ও তৃতীয়বার কর্নার থেকে সরাসরি গোল। ৩৯ মিনিটে বাগানের প্রাক্তন ‘ঘরের ছেলে’ কৃষ্ণই ওড়িশাকে এগিয়ে দেন। ইয়ুস্তেকে কাটিয়ে কাইথকে পরাস্ত করে অসাধারণ গোল করে কৃষ্ণ স্কোরলাইন ২-১ করেন। প্রথমার্ধে ৫ মিনিট ইনজুরি টাইম দেওয়া হয়েছিল। ৪১ মিনিটে পেত্রাতোস ওড়িশার গোলকিপারকে পেয়েও গোল ফেলে আসেন মাঠে। বিরতির বাঁশি বাজার ঠিক প্রাক লগ্নে ওড়িশা এগিয়ে যাওয়ার অসাধারণ সুযোগ হারায়।

দ্বিতীয়ার্ধে কোনও দলই গোল করতে পারেনি। তবে দুই দলকেই একটা সময়ের পর ১০ জনে খেলতে হয়। বিরতির ঠিক আগে হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়া সাদিকু ৬৭ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড এবং লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন তিনি। বাতাসে বল দখলের লড়াইয়ে সাদিকু ধাক্কা দিয়ে বসেন জহুকে। রেফারি তাঁকে মাঠছাড়া করতে কালবিলম্ব করেননি। এর ঠিক সাত মিনিট পরে ওড়িশাও ১০ জনের দলে পরিণত হয়। গোলদাতা ডেলগাডো আগেই হলুদ কার্ড দেখেছিলেন। এবার বক্সের ঠিক বাইরে হ্যান্ডবল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে পান মার্চিং অর্ডার। চলতি মরসুমে এই নিয়ে পাঁচবার মুখোমুখি হল এই দুই দল। আইএসএল ও এএফসি মিলিয়ে। অতীতে ফলফল ছিল ০-০। এবার ওড়িশা এগিয়ে গেল ১-০ ব্য়বধানে। এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে, তাহলে কি লিগ শিল্ড জিতে আত্মতুষ্টিতে ভুগতে শুরু করেছিলেন হাবাসের শিষ্যরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.