মোহনবাগান-ফেডারেশন দ্বন্দ্ব চরমে! শুভাশিসের চোট নিয়ে এআইএফএফ-এর সঙ্গে জোর লেগে গেল সবুজ-মেরুনের

জাতীয় দলে ফুটবলার না-ছাড়া এবং শুভাশিস বসুর চোট পাওয়া নিয়ে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে জোর লেগে গেল মোহনবাগানের।

ভারতীয় দলে খেলার সময় শুভাশিস চোট পেয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছিল মোহনবাগান। এবং তার জন‍্য এ বার তাদের কোনও ফুটবলারকেই জাতীয় দলের শিবিরে ছাড়বে না বলে জানিয়ে দিয়েছিল তারা। এ বার ফেডারেশন চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিল মোহনবাগান অধিনায়ক শুভাশিস আইএসএল ফাইনালে খেলার সময় চোট পেয়েছিলেন। এই চোট কোনও ভাবেই গত মার্চে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ম‍্যাচ খেলার সময় নয়।

ফেডারেশন উপসচিব এম সত্যনারায়ণ মোহনবাগানকে দেওয়া চিঠিতে লিখেছেন, “গত ২৫ মার্চ এএফসি এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ম্যাচে শুভাশিস বসু মোটেই চোট পাননি। শিলংয়ে ওই ম‍্যাচে উনি ৮৫ মিনিট খেলেছিলেন। তারপর তাঁকে তুলে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটা ট‍্যাকটিক‍্যাল কারণে, চোটর জন্য নয়। তারপর ৩ এবং ৭ এপ্রিল আইএসএল সেমিফাইনালের দুটো পর্বতেই উনি পুরো ম‍্যাচ খেলেছিলেন। তারপর ১২ এপ্রিল ফাইনালেও ৯০ মিনিট খেলেছিলেন। তারপর তাঁকে তুলে নেওয়া হয়েছিল। উনি ১৮ মে জাতীয় দলের শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু একটা-দুটো সেশন অনুশীলন করার পরেই ডান পায়ের কুঁচকিতে চোটের কথা বলেছিলেন। উনি নিজেই চিকিৎসকদের বলেছিলেন, আইএসএল ফাইনালে চোট পেয়েছিলেন।”

ফেডারেশনের দাবি, শুভাশিসের চোটের ব্যাপারে মোহনবাগান কিছু জানায়নি। ওই চিঠিতে লেখা আছে, “চোট পাওয়ার পর শুভাশিস শুধু বিশ্রামে থেকেছেন। দীর্ঘ এক মাস পরে আবার শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন। এই সময়ে ওঁর কোনও পরীক্ষা বা রিহ‍্যাব হয়নি। এগুলো জাতীয় দলের মেডিক্যাল দল বা সাপোর্ট স্টাফদের কিছুই জানানো হয়নি। যখন আবার যন্ত্রণা শুরু হয়, ওঁকে পাঁচ দিন বিশ্রামে থাকতে বলা হয়েছিল। সঙ্গে চিকিৎসার ব্যবস্থা এবং রিহ‍্যাবের ব‍্যবস্থাও করা হয়েছিল।”

ফেডারেশনের দাবি, শুভাশিসকে জাতীয় দলের চিকিৎসকেদের পরামর্শ মেনে ৫ জুন শিবির থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়ছিল। সত্যনারায়ণ চিঠিতে লিখেছেন, “যদিও শুভাশিসকে দেখে সুস্থ মনে হয়ছিল এবং কোচ চেয়েছিলেন তিনি ৯ জুন এএফসি এশিয়ান কাপ যোগ্যতা অর্জনের ম্যাচ খেলুন, কিন্তু চোট বেড়ে যাবে ভেবে চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী ৫ জুন শুভাশিসকে শিবির থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়ছিল। শুভাশিস যখন ক্লাবের তত্ত্বাবধানে রিহ‍্যাব করছিলেন, তখন আমাদের চিকিৎসক দল সব সময়েই ওঁর সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিল।”

মোহনবাগানের এক কর্তা সোমবার অভিযোগ করেছিলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জনের ম্যাচে চোট পেয়েছিলেন শুভাশিস। সেই কারণে এখনও মাঠে ফিরতে পারেননি। ওই কর্তা বলেছিলেনন, “যত বার ওরা আমাদের ফুটবলার নিয়েছে, তিন-চার জন চোট নিয়ে ফিরেছে। ফেডারেশন কোনও রকমের যোগাযোগ করেনি। ফুটবলারদের খেয়ালও রাখেনি।”

শুভাশিসের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেছিলেন, “শুভাশিসের দিকে দেখুন। এখনও রিহ্যাবে রয়েছে। এখনও মরসুমের একটা ম্যাচেও খেলতে পারেনি। আমরা তো ওর বেতন দিচ্ছি। কিন্তু ফেডারেশনের তরফে কেউ একটা খোঁজও নেয়নি ওর ব্যাপারে। ফিফা উইন্ডো না হওয়ায় আমরা ফুটবলার ছাড়তে বাধ্য নই। চোট পেলে কেউ দায়িত্ব নেবে না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.