শেষ আটটি ডার্বিতে জয়। গত মরসুমের থেকেও এ বারের দল আরও শক্তিশালী। সঙ্গে রয়েছেন টাটকা বিশ্বকাপার। স্বাভাবিক ভাবে শনিবার কলকাতা ডার্বিতে নামার আগে মোহনবাগান কোচ জুয়ান ফেরান্দোর ফুরফুরে মেজাজে থাকার কথা। কিন্তু তিনি থাকতে পারছেন না। কারণ, স্প্যানিশ কোচের মতে এ বারের ইস্টবেঙ্গল দল অনেক শক্তিশালী। পাশাপাশি চার দিন পরে রয়েছে এএফসি কাপের ম্যাচও। তাই ডার্বিতে নিজেদের সামান্য এগিয়ে রেখেও ইস্টবেঙ্গলকে সমীহ করছেন ফেরান্দো।
কলকাতা ডার্বি গত কয়েক বছরে মোহনবাগানের কারণে একপেশে হয়ে গিয়েছে। আটটি ডার্বিতে একটানা জিতেছে তারা। তবে ইস্টবেঙ্গলের বিনিয়োগকারী ইমামি এ বার দল গঠনে বেশি বিনিয়োগ করেছে। ট্রান্সফার ফি দিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়েছে প্রভসুখন গিল, মন্দার রাও দেশাইয়ের মতো ফুটবলারকে। সেটা মাথায় রেখেই ফেরান্দো বলেছেন, “ইস্টবেঙ্গল ভাল ফুটবলার সই করিয়েছে। বিদেশি এবং ঘরোয়া ফুটবলাররাও ভাল। মন্দারকে গোয়ায় দেখেছি। গত বার মুম্বইয়ে খেলেছে। ইস্টবেঙ্গলের দল বেশ ভাল। এই মুহূর্তে ওদের ছোট করে দেখার দরকার নেই। ওরা দেরিতে শুরু করেছে। তাই সময় লাগবে। পরে কী হয় দেখা যাক। তবে ডার্বি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। দুই দলই জিততে চায়। আমরাও ডার্বি জিতেই পরের রাউন্ডে যেতে চাই।”
আগামী বুধবার এএফসি কাপে মোহনবাগানের ম্যাচ। গত বার আন্তঃআঞ্চলিক সেমিফাইনালে হারতে হয়েছে। এ বার শুধু ফাইনাল নয়, ট্রফি জেতা লক্ষ্য সবুজ-মেরুনের। সেটা মাথায় রেখেই ফেরান্দো বলেছেন, “আমাদের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ এএফসি কাপের ম্যাচ। কারণ ওটা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা। সব ফুটবলারই যে ম্যাচ খেলার জন্যে পুরোপুরি ফিট তা বলব না। কারও কাছে ক্ষমতা রয়েছে ১২০ মিনিট খেলার। কেউ আবার ৪৫ মিনিট খেলতে পারবে। কিন্তু গোটা দল নিয়েই আমরা কাজ করছি।”
ডুরান্ড কাপ এবং কলকাতা লিগ একসঙ্গে খেলতে হচ্ছে কলকাতার তিন প্রধানকে। কলকাতা লিগে খেলা সুহেলের মতো ফুটবলারেরা ডুরান্ডেও খেলে চলেছেন। স্বাভাবিক ভাবেই চোট-আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। সেটা রয়েছে ফেরান্দোর মাথাতেও। বলেছেন, “ফুটবলারেরা যাতে চোট-আঘাত না পায় সেটা শুরু থেকেই দেখতে হবে। সামনে লম্বা মরসুম পড়ে রয়েছে। একটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা ধরে এগোব। ফুটবলারদেরও সেটা বুঝিয়েছি। যত দ্রুত সম্ভব সেরা একাদশ তৈরি করে ফেলার চেষ্টা করব। প্রতি ম্যাচে সেরা ফুটবলারদেরই নামাতে চাই।”
আইএসএল যাঁর দাপটে মোহনবাগান জিতেছিল, সেই দিমিত্রি পেত্রাতোস ডার্বিতে খেলছেন। তিনিও লাল-হলুদকে সমীহ করতে চাইলেন। বলেছেন, “হয়তো অনেকেই আমাদের ফেভারিট বলছে। জানি আমরা কিছুটা এগিয়ে। কিন্তু এ ধরনের ম্যাচে যা খুশি হতে পারে। ওরাও জিততে মরিয়া হয়ে থাকবে। পেশাদার ফুটবলার হিসাবে ডার্বির মতো ম্যাচে চাপের জন্যে তৈরি থাকতে হবে।”
ফেরান্দোর কোচিংয়ে আইএসএল জিতলেও এ বার মোহনবাগানের সঙ্গে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসাবে জুড়ে দেওয়া হয়েছে আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাসকে। দুই স্পেনীয়ের মস্তিষ্কে কি ডার্বি জয় সম্ভব? পেত্রাতোস অবশ্য সাধুবাদ দিচ্ছেন দলের সিদ্ধান্তকে। বলেছেন, “বাড়তি কারওর থেকে যদি পরামর্শ পাওয়া যায় সেটা সব সময়ই ভাল। উনি অভিজ্ঞ। ফুটবল নিয়ে অনেক কিছু জানেন। কোচ ফেরান্দো এবং হাবাস দু’জনেই ফুটবল ভালবাসেন। আশা করি দু’জনের মস্তিষ্ক আমাদের গোটা মরসুমে সাফল্য পেতে সাহায্য করবে।”