শেষ ওভারে শর্মার বোলিংয়ে ‘মোহিত’ হার্দিকরা, গুজরাতের কাছে জেতা ম্যাচ হারল লখনউ

অনায়াসে জেতার মতো ম্যাচ ছিল লখনউয়ের কাছে। সেই ম্যাচ গড়াল শেষ ওভার পর্যন্ত। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে শেষ হাসি হাসলেন হার্দিক পাণ্ড্য। তাঁকে সেই সুযোগ করে দিলেন মোহিত শর্মা। অভিজ্ঞ পেসার গুজরাতের শেষ ওভার বল করতে এসেছিলেন। দরকার ছিল ১২ রান। দু’টি উইকেট নিয়ে ম্যাচ শেষ করে দিলেন। দু’টি রান আউট হল। কার্যত হারা ম্যাচ জিতে নিল গুজরাত।

২০২১-এর পর আইপিএলে খেলছেন মোহিত শর্মা। আক্ষরিক অর্থের ‘মোহিত’ করার মতো বোলিং করলেন তিনি। প্রায় ৩৫ বছর বয়স তাঁর। দেখে একটুও বোঝা গেল না। প্রত্যাবর্তনের ম্যাচেই সেরা ক্রিকেটার হয়েছিলেন। এ দিনও তাই হলেন। ডেথ ওভারে বোলিং করার জন্যে বিখ্যাত। এখনও যে ধার কমেনি, সেটা বোঝালেন। ১৮তম ওভার বল করতে এসে ৬ রান দিলেন। শেষ ওভারে এল চার রান।

গুজরাতের ১৩৬ রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা দারুণ করেছিল লখনউ। মনে হচ্ছিল ১৫ ওভারের মধ্যেই ম্যাচ শেষ করে দেবে তারা। সেই ম্যাচ যে এত দূর যাবে এবং শেষ ওভারে ফয়সালা হবে তা বিশ্বাসই করা যায় না। প্রথম ওভারে মহম্মদ শামি মেডেন পেলেন। পরের ওভার থেকেই কাইল মেয়ার্স শুরু করলেন তাণ্ডব, যা তিনি এ মরসুমে বার বার করেছেন। সপ্তম ওভারে যখন মেয়ার্স ফিরলেন, তখন দলের ৫৫ রান উঠে গিয়েছে। ক্রিজে জমে গিয়েছেন রাহুল।

মেয়ার্স যেখানে শেষ করেছিলেন সেখান থেকেই শুরু করলেন ক্রুণাল। এক বার তাঁর ক্যাচ পড়ল। তবে এই সময়ে আচমকাই লখনউয়ের রান তোলার গতি খুবই কমে গেল। না রাহুল, না ক্রুণাল, আগ্রাসী খেলা কারও মধ্যে দেখা গেল না। এক সময় লখনউয়ের কাছে জিততে গেলে প্রতি ওভারে ৬ রান তুললেই চলত। তা ক্রমশ বাড়তে থাকল। শেষ পর্যন্ত শেষ ওভারে দাঁড়াল ১২।

লখনউয়ের বিরুদ্ধে আবার ব্যাটিং ব্যর্থতার শিকার হয় গুজরাত টাইটান্স। লখনউয়ে খেলতে নেমে বড় রান করতে পারল না তারা। হার্দিক পাণ্ড্যের অর্ধশতরান না থাকলে তাদের স্কোর একশোও পেরত কিনা সন্দেহ। ঋদ্ধিমান সাহা এবং হার্দিক বাদে কোনও ব্যাটারই দাঁড়াতে পারলেন না।

লখনউয়ের বিরুদ্ধে শুরুতেই ধাক্কা খায় গুজরাত। দ্বিতীয় ওভারেই ফিরে যান দলের সবচেয়ে ছন্দে থাকা ক্রিকেটার শুভমন গিল। তাঁকে শূন্য রানে ফেরান ক্রুণাল পাণ্ড্য। সেখান থেকে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক হার্দিক পাণ্ড্য এবং ঋদ্ধিমান সাহা। দু’জনে মিলে গুজরাতের রান তুলতে থাকেন।

কিন্তু লখনউয়ের পিচ খুবই ধীরগতির ছিল। যে কারণে বল ব্যাটে আসছিল দেরিতে। ফলে দ্রুতগতিতে রান তুলতে সমস্যা হচ্ছিল ঋদ্ধি এবং হার্দিকের। ঋদ্ধি তবু একটু বোলারদের উপর আক্রমণ করার চেষ্টা করছিলেন। তবু খুব বেশি আগ্রাসী ব্যাটিং দেখা যায়নি। মরসুমের প্রথম অর্ধশতরান হয়ে যেতে পারত ঋদ্ধির। অল্পের জন্য তা হয়নি। ৩৭ বলে ৪৭ রান করে ফেরেন। অফস্টাম্পের বাইরে লোপ্পা বল ফেলেছিলেন ক্রুণাল। ঋদ্ধি ছয় মারতে গিয়েছিলেন। কিন্তু শটে জোর ছিল না। লং অনে সহজ ক্যাচ নেন দীপক হুডা।

ঋদ্ধি যাওয়ার পরের ওভারেই অভিনব মনোহরকে হারায় গুজরাত। বড় রান করতে পারেননি বিজয় শঙ্করও (১০)। এই অবস্থায় দলের রান তোলার ভার নিজের কাঁধেই তুলে নেন হার্দিক। শেষের দিকের ওভারগুলিতে মারতে দেখা যায় তাঁকে। রবি বিষ্ণোইয়ের ১৮তম ওভারে ওঠে ১৯ রান। শেষ ওভারের প্রথম বলেই মার্কাস স্টোয়নিসকে ছয় মারেন হার্দিক। তবে দ্বিতীয় বলেই আউট হয়ে যান ৬৬ রানে। কিন্তু বুদ্ধি দিয়ে ম্যাচ জিতে নিতে অসুবিধা হল না তাঁর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.