সন্দেশখালিকাণ্ডের প্রতিবাদে বসিরহাট এসপি অফিস ঘেরাও অভিযানে গিয়ে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে। শনিবার হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়ে দিল্লি চলে গিয়েছেন তিনি। এ বার দিল্লি থেকেই সুকান্ত জানালেন, আগামী ৭ মার্চ পশ্চিমবঙ্গে আসবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি এ-ও জানান, উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতেই সভা করানোর ইচ্ছা ছিল তাঁদের। কিন্তু তৃণমূল সরকার এবং প্রশাসনের তরফে ‘বাধা’ আসতে পারে। তাই উত্তর ২৪ পরগনারই বারাসতে সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সুকান্ত সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘সন্দেশখালির মা-বোনদের রক্ষা করতে আসছেন প্রধানমন্ত্রী।’’
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে দিল্লিতে শুরু হয়েছে বিজেপির জাতীয় সম্মেলন। সেই বৈঠকে ‘বিকশিত ভারত’ প্রস্তাব এনেছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা রাজনাথ সিংহ। তাতে সরকারের নানা সাফল্যের কাহিনির সঙ্গেই জায়গা পেয়েছিল সন্দেশখালি প্রসঙ্গ। রবিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের গলাতেও শোনা গিয়েছে সন্দেশখালির কথা। তিনি মমতার সরকারের নিন্দা করেন। বস্তুত, সন্দেশখালিতে নারী নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি বিবৃতি দেন। ঘটনাক্রমে সন্দেশখালি পরিদর্শনে আসছে জাতীয় মহিলা কমিশন। সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই জাতীয় স্তরে সক্রিয় রয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। সন্দেশখালির ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসনের সুপারিশ করে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে চিঠি দেন জাতীয় তফসিলি কমিশনের অন্তর্বর্তী চেয়ারম্যান অরুণ হালদার। লোকসভা ভোটের আগে বাংলায় প্রচারের ক্ষেত্রে সন্দেশখালিকে হাতিয়ার করছেন সুকান্তরা। এই প্রেক্ষিতে মোদীর বাংলা সফর ‘তাৎপর্যপূর্ণ’।
সন্দেশখালির ঘটনার গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে সুকান্ত মায়ের প্রসঙ্গ টেনে এনেছিলেন। কয়েক দিন আগে তিনি বলেন, ‘‘আমার পরিবার অরাজনৈতিক। আমি পড়াশুনো করে অধ্যাপক হয়েছিলাম। তার পর রাজনীতিতে যোগ দিয়েছি। রাজনীতিতে যোগদানের পর থেকে রোজ মা ফোন করে দুটো কথা জিজ্ঞাসা করেন— ‘খেয়েছিস বাবা? আর ভাল আছিস তো?’ এই দুটো প্রশ্নের বাইরে তিনি কোনও দিন কিছু জিজ্ঞাসা করেননি। কিন্তু আমার মায়ের মতো মহিলাও এখন জিজ্ঞাসা করছেন, সন্দেশখালি কেমন আছে?’’
বিজেপি সূত্রে খবর, আগামী ৭ মার্চ বারাসতে মহিলা ন্যায় সমাবেশে বক্তৃতা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে সন্দেশখালি প্রসঙ্গ প্রধানন্ত্রীর গলায় উঠে আসবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
অন্য দিকে, রবিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সিউড়ির সভা থেকে সন্দেশখালি নিয়ে বলতে গিয়ে বিজেপিকে নিশানা করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘মানুষের উপর অত্যাচার হলে আমাদের সরকার ব্যবস্থা নেবে। একটা ঘটনা ঘটেছে। প্রথমে ইডিকে পাঠিয়েছে (রেশন মামলার তদন্তে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা)। তার পর ইডিকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপি ঢুকেছে।’’ মমতার অভিযোগ, ‘‘কেউ কেউ তিলকে তাল করছেন।’’