সংস্কৃত সহ পিছিয়ে পড়া ১০ ভাষাকে প্রাধান্য দিতে বড় উদ্যোগ মোদী সরকারের, লক্ষ্য প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান ভিত্তিক পড়াশোনা

শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যবহারের নিরিখে পিছিয়ে থাকা ১০ টি ভাষাকে এবার প্রযুক্তি বিজ্ঞানে ব্যবহার যোগ্য পরিভাষার অভিধান তৈরি করার উদ্যোগ নিলো মোদী সরকার। সিদ্ধান্ত হয়েছে কারিগরি ও প্রযুক্তি শিক্ষায় আঞ্চলিক ভাষাকে এগিয়ে আনতে এই কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে।

কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের পৃষ্ঠপোষকতা প্রাপ্ত কমিশন ফর সায়েন্টিফিক এন্ড টেকনোলজি টার্মিনোলজি বা সিএসটিটি এই বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে। ছেলেমেয়েদের শেখার পরিসরকে বাড়িয়ে দিতেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানা গেছে। জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ তে স্কুল কলেজে আঞ্চলিক ভাষাগুলিকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সেই পরিকল্পনার রূপায়ণের পথে এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।

সিএসটিটি জানিয়েছে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় যে ১০ টি ভাষার ব্যবহার সেভাবে চোখে পড়ে না সেই ভাষাগুলির পৃথক অভিধান তৈরি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে যে দশটি ভাষাকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে সেগুলি হল বোড়ো, সাঁওতালি, ডোড়ি, কাশ্মিরী, কঙ্কোনি, নেপালি, মনিপুরী, সিন্ধি, মৈথিলী এবং সংস্কৃত।

প্রত্যেক ভাষার আলাদা আলাদা অভিধান তৈরি করা হবে। ভাষা পিছু ৫০০০ শব্দ সেই অভিযানে জায়গা পাবে। সব রকম সংস্করণে পাওয়া যাবে এই অভিধান। কাগজে ছাপা হরফে প্রত্যেক ভাষায় এক থেকে দুই হাজার অভিধান প্রকাশ হবে। বিনামূল্যে পাওয়া যাবে ডিজিটাল সংস্করণও। সেখানে নির্দিষ্ট শব্দ বসিয়ে তার অর্থ খুঁজে পাওয়ার উপায় থাকবে।

যে দশটি ভাষাকে প্রাথমিক পর্যায়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে সেগুলি হল অষ্টম তফসিলী অনুযায়ী বাইশটি সরকারি ভাষার মধ্যেই পড়ে। কিন্তু পঠন-পাঠনে এই দশটি ভাষার ব্যবহার তেমন ভাবে লক্ষ্য করা যায় না। বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তির ব্যাখ্যায় সংশ্লিষ্ট ভাষায় পর্যাপ্ত শব্দের যোগান নেই। তাই প্রাথমিক স্কুলে কোথাও কোথাও ব্যবহৃত হলেও প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের ব্যাখ্যায় ইংরেজি ব্যবহার করতে হয়।

অভিধান তৈরিতে আপাতত যে ১৫ টি বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে সেগুলি হল সাংবাদিকতা, পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, রসায়ন, মনোবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা, পদার্থবিজ্ঞান, অর্থনীতি, আয়ুর্বেদ, গণিত, কম্পিউটার সায়েন্স, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, কৃষিবিদ্যা সিভিল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং। এর ফলে প্রাথমিক মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় দলের পড়ুয়ারা উপকৃত হবে। রাজ্যস্তরের বোর্ড, বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, এছাড়া ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি যার কমোন এন্ট্রান্সটেড জয়েন্ট এন্ট্রান্স এক্সামিনেশনের মতো প্রবেশিকা পরীক্ষা নেয়, তাদের হাতেও তুলে দেওয়া হবে অভিধান, যাতে পড়ুয়াদের কাছে তা পৌঁছয়। ইউজিসি সাহায্য নেওয়া হবে এই অভিধান তৈরিতে। ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি টেস্ট এর জন্য এটি ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.