Modi comment, তৃতীয়বারের কার্যকালে বড় বড় সিদ্ধান্ত নেবেন, মোদীর মন্তব্য ঘিরে জল্পনা শুরু, কী সেই সিদ্ধান্ত? কোন বড় ইঙ্গিত দিতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী?

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সংসদের দাঁড়িয়ে ঘোষণা করে দিয়েছেন তৃতীয়বারের জন্য আর কেউ নয়, তারাই সরকার তৈরি করতে চলেছেন। আসন্ন লোকসভা ভোটে বিজেপি ৩৭০ আসন পাবে এবং এনডিএ জোট অন্তত ৪০০ আসন পাবে বলেই দাবি তাঁর। একইসঙ্গে তাঁর দাবি, ক্ষমতায় এলেই তাঁরা বড় বড় সিদ্ধান্ত নেবেন। আর মোদীর এই মন্তব্য ঘিরেই শুরু হয়েছে জল্পনা। প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে কী সেই সিদ্ধান্ত? কোন বড় ইঙ্গিত দিতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী?

এই মুহূর্তে মোদীর বিরুদ্ধে কোনো মুখ নেই, যে ছন্নছাড়া বিরোধীরা বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে নামবে। রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, এই সব ফ্যাক্টর ইতিমধ্যেই বিজেপিকে এগিয়ে রেখেছে। ফলে মোদী ক্ষমতায় আসবে কিনা সেই আলোচনার থেকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় এসে কোন‌ বড় পরিবর্তনের দিকে এগোবে মোদী নেতৃত্বাধীন বিজেপি।

লোকসভায় দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমি দেশের মেজাজ বুঝতে পারছি, এনডিএ এবার ৪০০-র বেশি আসন পাবে, বিজেপি অন্তত ৩৭০ আসন পাবে। তার সঙ্গে তিনি এও ঘোষণা করেন, আমাদের তৃতীয়কার্যকাল মেয়াদে বিরাট বড় বড় সিদ্ধান্ত দেখা যাবে। যা আগামী হাজার বছরের ভিত তৈরি করবে। জোর দিয়ে তিনি বলেছেন, তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি বলে পরিগণিত হবে। তিনি বলেন, দশ বছরের সরকার চালানোর অভিজ্ঞতা আজকের শক্তিশালী অর্থনীতি দেখে ভারতের দ্রুত উন্নতি দেখে আমি নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি যে, তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরে ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ বলে পরিগণিত হবে, এটা মোদীর গ্যারান্টি।

কিন্তু শুধু মাত্র অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভিত গঠনের কথাই কি তিনি বলতে চেয়েছেন, ”বড় বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে” মন্তব্যের মধ্য দিয়ে? নাকি আর কিছু আছে? আর কী কী বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারে তৃতীয় মোদী সরকার? এনডিএ- তথা বিজেপির গত দশ বছরের শাসনকাল দেখলে এটা স্পষ্ট, একের পর এক হিন্দু স্বার্থের কথা মাথায় রেখে পদক্ষেপ করেছে মোদী সরকার। যার মধ্যে অন্যতম অযোধ্যার রাম মন্দির। আর এই রামমন্দির ধীরে ধীরে জ্ঞানব্যাপী, মথুরার শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি পুনরুদ্ধারের পথ প্রশস্ত করেছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

মোদী সংসদে বলেন, যে সভ্যতাগুলি ২০০ বছর আগে পর্যন্ত অত্যন্ত সমৃদ্ধ ছিল, সেগুলি এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত স্বাধীনতার পর যারা দীর্ঘ সময় ধরে দেশ শাসন করেছিলেন তারা ধর্মীয় স্থানগুলির গুরুত্ব স্বীকার করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। রাজনৈতিক লাভের জন্য তারা নিজের সংস্কৃতি অতীত নিয়ে লজ্জিত হওয়ার একটা প্রবণতা তৈরি করেছেন। তিনি আরো বলেছেন, কোনও দেশই তার অতীতকে ভুলে গিয়ে নিজের শেকড় কেটে দিয়ে উন্নত হতে পারে না। আমি সন্তুষ্ট, “যে গত ১০ বছরে ভারতের সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। ভারতের ডবল ইঞ্জিন সরকার, উন্নয়ন, ঐতিহ্য উভয়কেই তাদের নীতির ভাগীদার করতে পেরেছে।” মোদীর এই বক্তব্যের উজ্জ্বল উদাহরণ উত্তরপ্রদেশ।

তবে রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, তৃতীয় কার্যকালের মেয়াদে অন্যতম বড় ইস্যু হতে পারে পাক অধিকৃত কাশ্মীর পুর্নদখল, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি, এক দেশ এক ভোটের প্রচলন, এনআরসি লাগুর মতো ইস্যু। হিসেব কষলে দেখা যাচ্ছে এই প্রত্যেকটি ইস্যু যেমন‌ বড় তেমনি দেশের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যর পরিবর্তনে অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করতে সক্ষম। যা দেশের আগামী দিনের নতুন ভিত তৈরির কারিগর হবে, যা কিনা মোদী দাবি করেছেন।

পাক অধিকৃত কাশ্মীর পুর্নদখলের অর্থ সামরিক ক্ষেত্রে তথা পাকিস্তানের সঙ্গে দীর্ঘ কুটনৈতিক সম্পর্কের জায়গায় বড়সড় পদক্ষেপ।‌ ভারতের ক্ষমতা সম্পর্কে বিশ্ব তথা প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছেও বড় বার্তা পৌছে দেওয়া। যার ফলে ভারতের গ্রহণযোগ্যতা আর বৃদ্ধি পাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হবে।

অভিন্ন দেওয়ানি বিধি তো বিজেপির অন্যতম লক্ষ্য। ইতিমধ্যেই অসম, উত্তরাখন্ড অভিন্ন দেওয়ানি বিধি লাগুর ক্ষেত্রে পদক্ষেপ করেছে। আর তৃতীয় কার্যকালের মেয়াদে মোদীর দাবি মতো বিজেপি আসন সংখ্যা পেয়ে গেলে তা দেশজুড়ে লাগুর ক্ষেত্রে আর বাধা থাকবে না।

তবে সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ হতে পারে এক দেশ এক ভোট চালু।‌ এর ফলে বিজেপির দাবি মতো অর্থ সময় সাশ্রয়ের সাথে দেশের প্রশাসনিক ক্ষেত্রেও বড় পরিসরে বদল আসতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.