সিরিয়ায় (Syria) বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা এক শহরে হাসপাতালের (Hospital) উপরে আছড়ে পড়ল ক্ষেপণাস্ত্র। নারকীয় এই হামলায় (Terror attack) অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত কমপক্ষে ২৭ জন। মৃতদের মধ্যে ২ জন স্বাস্থ্যকর্মী বলে জানা গিয়েছে। বাকিরা হাসপাতালে ভরতি থাকা রোগী। সিরিয়ায় অবস্থিত ব্রিটেনের এক মানবাধিকার সংস্থার তরফে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৮ হয়েছে।
হামলার পরে হাসপাতালটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দ্রুত রোগীদের সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, আফরিন নামের ওই শহরে আশ শিফা হাসপাতাল ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চল লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়। সঙ্গে সঙ্গে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় এলাকা। কারা এই হামলার পিছনে রয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে যে এলাকা থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়েছে সেখানে সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী কুর্দিশের নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস তথা SDF-এর যোদ্ধারা মোতায়েন ছিল। সেই সঙ্গে মোতায়েন ছিল সরকারি সেনার দলও। এক বিবৃতিতে অবশ্য এসডিএফ-এর তরফে দাবি করা হয়েছে, তারা এই হামলা চালায়নি। সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, রকেট ও শেল ছোঁড়া হয়েছিল হাসপাতাল ও আশপাশের এলাকা লক্ষ্য করে। এই হামলার জন্য কুর্দিশদেরই দায়ী করেছে সরকার। পুলিশ পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
আফরিনের এই হাসপাতাল উত্তর সিরিয়ার অন্যতম বৃহত্তম হাসপাতাল। সেখানে হাজার হাজার রোগী ভরতি থাকে এক সময়ে। শল্য চিকিৎসা থেকে প্রসূতি বিভাগ সবই রয়েছে। এখানে। স্বাভাবিক ভাবেই সেখানে এই হামলার ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে আফরিনের দখল নেয় তুরস্ক ও সিরিয়ার এক বিদ্রোহী গোষ্ঠী। সেই সময় কুর্দিশ গোষ্ঠীর বিদ্রোহী ও সেখানকার অসংখ্য কুর্দিশ বাসিন্দাদের এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করা হয়। মনে করা হচ্ছে, তারই শোধ নিতে এই ঘৃণ্য হামলা।
২০১১ সাল থেকে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলছে। সরকারের সঙ্গে বিদ্রোহীদের সংঘর্ষে গত এক দশকে প্রায় ৪ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে হামলায় ঘরবাড়ি হারানো সাধারণ মানুষ। গোটা দেশের অর্থনীতিও বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে এই সংঘর্ষের ধাক্কায়।