দীর্ঘ বিভ্রাটের পর অবশেষে স্বাভাবিক হল মেট্রো পরিষেবা। দক্ষিণেশ্বর স্টেশন থেকেই সোমবার সকালে মেট্রো চলতে শুরু করেছে। রবিবার দুপুর থেকে ওই লাইনে মেট্রো চলাচল বন্ধ ছিল। রাত পর্যন্ত চালানো যায়নি একটি মেট্রোও।
সোমবার সকাল থেকে অবশ্য স্বাভাবিক ছন্দেই দক্ষিণেশ্বর থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত মেট্রো চলছে। চালু আছে কবি সুভাষ থেকে দক্ষিণেশ্বর পরিষেবাও। তবে রবিবারের অভিজ্ঞতার পর অনেকেই ওই রুট এড়িয়ে যাচ্ছেন। সোমবার সকালে তাই দক্ষিণেশ্বর কিংবা বরাহনগর স্টেশনে অন্যান্য দিনের তুলনায় ভিড় খানিকটা কম ছিল। নিত্যযাত্রীদের বক্তব্য, মেট্রো স্বাভাবিক হয়েছে কি না, তা তাঁরা অনেকেই জানতে পারেননি। তাই বিকল্প পথে যাতায়াতের পরিকল্পনা করে বেরিয়েছিলেন বাড়ি থেকে। মেট্রো স্বাভাবিক দেখে অনেকে তাতে উঠেছেন। অনেকে মেট্রোর দিকেই ঘেঁষেননি।
দক্ষিণেশ্বর মেট্রো স্টেশন থেকে মেট্রো ধরার জন্য অনেকেই ট্রেনে করে বালি স্টেশন পর্যন্ত আসেন এবং সেখান থেকে অটোতে চেপে পৌঁছে যান দক্ষিণেশ্বর। সোমবার সকালে দেখা গেল, বালিঘাট অটো স্ট্যান্ডে দক্ষিণেশ্বর যাওয়ার সেই চেনা ভিড় নেই। অটোচালকেরা অনেকেই যাত্রীদের যেচে জানাচ্ছেন, মেট্রো পরিষেবা স্বাভাবিক।
রবিবার দুপুর ২টো নাগাদ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল দক্ষিণেশ্বর থেকে দমদম যাওয়ার মেট্রো পরিষেবা। সাত ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পর রাত সওয়া ৯টা নাগাদ জানা যায়, রবিবার আর ওই পথে চলবেই না কোনও মেট্রো। যদিও নোয়াপাড়া থেকে দমদম পর্যন্ত মেট্রো চলাচল শুরু হয়েছিল সন্ধ্যার দিকে। কিন্তু দক্ষিণেশ্বর থেকে নোয়াপাড়া পর্যন্ত আপ বা ডাউন কোনও লাইনেই আর মেট্রোর চাকা গড়ায়নি। অর্থাৎ কলকাতা মেট্রোর একটি অংশে দিনভর পুরোপুরি বন্ধ থেকেছে পরিষেবা। যা কলকাতা মেট্রোর ইতিহাসে এক রকম নজিরবিহীন ঘটনা বলেই মনে করছেন যাত্রীদের একাংশ। রবিবার থাকায় মেট্রোয় অন্যান্য দিনের তুলনায় ভিড় কম ছিল। তাই যাত্রীদের ভোগান্তি কিছুটা হলেও কম হয়েছে। অন্য কাজের দিনে পরিষেবা এত দীর্ঘ সময়ের জন্য বন্ধ থাকলে যাত্রী ভোগান্তি চরমে পৌঁছত।
কলকাতা মেট্রোর তরফে মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্রও রবিবার রাতে তেমন কোনও আশার কথা শোনাতে পারেননি। এমনকি, সোমবার সকালে পরিষেবা স্বাভাবিক থাকবে কি না, সে বিষয়েও নিশ্চিত করে কিছু জানাতে পারেননি তিনি। আনন্দবাজার অনলাইনকে কৌশিক বলেছিলেন, ‘‘কাজ চলছে আমরা দ্রুত সমস্যার সমাধান করার যথাসম্ভব চেষ্টা করেছি। কিন্তু রবিবার আর সার্ভিস আওয়ারের মধ্যে মেট্রো চালানো সম্ভব হল না।’’
যাত্রীরা এই মেট্রো বিভ্রাটের কারণে কতটা অনিশ্চয়তা এবং সংশয়ের মধ্যে পড়েছেন, তা অনুমেয়। সোমবার সকালে রাস্তাঘাটেও তার পরিচয় পাওয়া গেল। মেট্রো চলছে কি না, তা জানতে না পেরে বিকল্প ব্যবস্থা করতে বাধ্য হয়েছেন অনেকে। ফলে সপ্তাহের প্রথম দিনেও রয়ে গেল রবিবারের ভোগান্তির আঁচ।