পূর্ববঙ্গে হিন্দুদের স্মৃতি (৮৪) গৌরারং জমিদার বাড়ি 

 গৌরারং জমিদারবাড়ি বাংলাদেশের 
সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার এক ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি। এটি বাংলাদেশের প্রাগাধুনিক পুরাকীর্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন।

প্রায় দু’শ বছর আগে জমিদার রাজেন্দ্র কুমার চৌধুরী ও জমিদার রাকেশ রঞ্জন চৌধুরীর হাতে এই জমিদার বাড়ি তৈরি হয়। ত্রিশ একর জমির ওপর তাঁরা এই জমিদার বাড়ি তৈরি করেন। তাঁদের সময় এখানে জমিদারি চালু হলেও মূলত জমিদার রাম গোবিন্দ চৌধুরীর সময়ে এই জমিদার বাড়ি বিস্তৃত হয়। তিনিই ছিলেন এই এলাকার প্রতাপশালী জমিদার।

তাঁর জমিদারির আমলে জমিদার বংশধর ছাড়া অন্য কেউ এখান দিয়ে জুতো পরে হাঁটতে পারত না। এই জমিদার বাড়িতে আলাদা আলাদা ছটি ভবন ও রংমহল, অন্দরমহল, সিংহাসন ও জলসাঘর রয়েছে। রংমহলের দেয়ালে নারী ও লতাপাতার ছবি আঁকা।

এছাড়া মূল ভবনের ডান দিকে একটি দিঘী রয়েছে, যেটিতে জমিদার বাড়ির মহিলারা স্নান করতেন। এখানে যাতায়াতের জন্য জল বারান্দাও তৈরি করা হয়। প্রায় একশ বছর আগে এই জমিদার বাড়ি  ভূমিকম্পে ভেঙ্গে যায়। সে সময় জমিদারের ছোট ভাই মাটি চাপা পড়ে মারা যান।১৯৭১-এ  মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনী এই জমিদার বাড়ির ওপর ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। ভূমিকম্পের পর জমিদার বংশের কেউই এখানে বসবাস করেন না। দেশ ভাগের পর জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পর এখানকার জমিদারিরও পতন হয়। এখানকার শেষ জমিদার ছিলেন নগেন্দ্র চৌধুরী।

তবে এই জমিদার বংশধর এখনো এখানে আছেন। সর্বশেষ জমিদার নগেন্দ্র চৌধুরীর ছেলে নিরঞ্জন চৌধুরী এখন সুনামগঞ্জ শহরে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।  বর্তমানে এই জমিদার বাড়ি অযত্ন ও অবহেলার কারণে প্রায় ধ্বংসের মুখে। জমিদার বাড়ির দেয়ালগুলো শ্যাওলায় পরিপূর্ণ এবং প্রায় কয়েক জায়গা ধসে পড়েছে। পুরো জমিদার বাড়িটি এখন লতাপাতা ও জঙ্গলে জরাজীর্ণ হয়ে রয়েছে। সূত্র— উইকিপিডিয়া।
সঙ্কলন— অশোক সেনগুপ্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.