“কী জেলা চালাচ্ছ তুমি? এত দিন জেলায় আছো। আমার ধারণাই বদলে গেল। আমার পার্টির লোক হলে আমি টেনে চারটে থাপ্পড় মারতাম।’
সোমবার পুরুলিয়ার প্রশাসনিক বৈঠকে জেলাশাসক রাহুল মজুমদারের ওপরে রেগে অগ্নিশর্মা হয়ে এই মন্তব্য করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরে বৃহস্পতিবার বদলি হলেন জেলাশাসক। অনেকে এই বদলির নেপথ্যে মুখ্যমন্ত্রীর কোপ বলে মনে করছেন। এই ঘটনায় অনেকেই স্তম্ভিত। প্রশ্ন উঠছে মেধাবী বাঙালিরা আইএএস পরীক্ষায় বসায় অনীহার এটাও কি অন্যতম কারণ?
জাতীয় স্তরে স্বীকৃত প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, প্রবীন শিক্ষাবিদ নিখিল রঞ্জন ব্যানার্জী শুক্রবার প্রতিক্রিয়ায় এই প্রতিবেদককে বলেন, “আমি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নই। রাজনীতির কথা জানিনা। তবে, প্রশ্নের আশঙ্কা অনেকটাই ঠিক। বাঙালি আবেগপ্রবণ জাতি। এরকম চলতে থাকলে অনেক মেধাবীর আইএএস হওয়ার সাধ উড়ে যাবে।“ প্রকাশ্যে কোনও মুখ্যমন্ত্রীর এরকম ভাষায় কি তাঁর/ রাজ্যের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হতে পারে? জবাবে ‘বেসু’-র প্রাক্তন উপাচার্য তথা ‘ওয়েবেল’-এর প্রাক্তন চেয়ারম্যান নিখিলবাবু বলেন, “কেবল এ রাজ্যে নয়, দেশের বিভিন্ন রাজ্যে, এবং কেন্দ্রেও এ জিনিসটা চোখে পড়ে। বহু দেশে গিয়েছি। শীর্ষ রাজনীতিকদের এ রকম আচরণ ইওরোপ-আমেরিকায় শুনিনি।“ সভায় আমলাদের ‘তুমি’ বলে সম্বোধন করার বিষয়টিতেও আপত্তি জানান নিখিলবাবু। এই সঙ্গে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, “কে, কাকে কীভাবে সম্বোধন করবেন, এটা তাঁর ব্যাপার। আমি পড়ুয়াদের তুমি বলতাম। শিক্ষক-ছাত্র সম্পর্কে ওটাই দস্তুর। আর সহপাঠী ছাড়া কখনও, কাউকে তুমি বলিনি।“
অশোক সেনগুপ্ত