প্যারিস অলিম্পিক্সে জোড়া পদক জয়ের পর মনু ভাকের এখন তারকার সম্মান পাচ্ছেন। ২২ বছরের শুটারের নজরকাড়া সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে আর এক জনের অবদান। তিনি মনুর কোচ যশপাল রানা। ছাত্রীর সাফল্যের সুবাদে আবার আলোচনায় উঠে এসেছেন ভারতের প্রাক্তন শুটার। সেই রানাকেই দেশে ফিরে সংসার চালানোর জন্য চাকরি খুঁজতে হবে।
খেলোয়াড়জীবনে দেশের অন্যতম সেরা শুটার ছিলেন রানা। ২০০৬ সালের এশিয়ান গেমসে তিনটি সোনা-সহ চারটি পদক জিতেছিলেন। ১৯৯৪ এশিয়ান গেমসেও সোনা জিতেছিলেন। সেই রানাই মনুর কোচ। প্যারিসে ছাত্রীর সাফল্যে উচ্ছ্বসিত রানা। তবে তাঁর গলায় শোনা গিয়েছে আক্ষেপ, অভিমান। রানা বলেছেন, ‘‘টোকিয়ো গেমসের পর যাঁরা আমাকে দোষারোপ করেছিলেন, আমাকে খলনায়ক বানিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁরাই এখন আমার সাক্ষাৎকার চাইছেন। অথচ টোকিয়োয় আমি যাইনি। সাক্ষাৎকার দিতে আমার কোনও সমস্যা নেই। দিতেই পারি। কিন্তু তাঁরা আমার অনেক ক্ষতি করে দিয়েছেন।’’
রানা কৃতিত্ব নিতে চাইছেন না। প্যারিসে সাফল্যের সব কৃতিত্ব দিয়ে দিচ্ছেন প্রিয় ছাত্রীকে। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি কে? কেউ নই। মনু আমার সাহায্য চেয়েছিল। আমি শুধু সেটুকুই করেছি। তাঁরা (সমালোচকেরা) কি জানেন, গত তিন বছর আমি জাতীয় রাইফেল অ্যাসোসিয়েশন থেকে কোনও বেতন পাইনি। অন্য কোনও সংস্থাও আমাকে টাকা দেয় না। মনুর সাফল্যেই আমি খুশি। ও যেটা করতে পারে, সেটা করে দেখিয়েছে। আমি শুধু ওকে ওর দক্ষতা কাজে লাগাতে সাহায্য করেছি। ভারতে ফেরার পর আবার আমাকে সব কিছু নতুন করে শুরু করতে হবে। রোজগার করার জন্য আমাকে একটা কাজ খুঁজতে হবে।’’
প্যারিসে ছাত্রীর পাশে থাকার সুযোগ দেওয়ার জন্য রানা ধন্যবাদ জানিয়েছেন ভারতীয় অলিম্পিক সংস্থার প্রধান পিটি ঊষা এবং শেফ দ্য মিশন গগন নারাংকে। মনুকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত রানা বলেছেন, ‘‘মনু এখন তারকা। আর আমি এখন এক জন চাকরিহীন কোচ। আবার বলছি আমি কেউ না। মনু নিজের সাফল্য দিয়ে আমাকে প্রাসঙ্গিক করে তুলেছে। আমি ওকে শুধু সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। এখন আমাকে দ্রুত একটা কাজ খুঁজতে হবে। শেষ তিন বছর বেশ কঠিন গিয়েছে আমার। সেগুলো নিয়ে কথা বলতে চাই না। ভারতে ফেরার পর কেউ কি আমাকে একটা কাজের ব্যবস্থা করে দিতে পারেন?’’ কাতর শুনিয়েছে ভারতকে বহু পদক এনে দেওয়া প্রাক্তন শুটারের গলা।