মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় সারের দাম নিয়ে প্রশ্ন করায় ‘মাওবাদী’ তকমা জুটেছিল। গ্রেফতারও হয়েছিলেন। ঝাড়গ্রামের সেই শিলাদিত্য চৌধুরীর সঙ্গে কথা বললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। হাতও মেলালেন। রবিবার শুভেন্দুর সঙ্গে সাক্ষাতের পরে শিলাদিত্য জানালেন, ১১ বছর আগের সেই মামলার বিষয়ে কথা হয়েছে তাঁদের মধ্যে। বিরোধী দলনেতার কাছে সাহায্যও চেয়েছেন তিনি। এ ব্যাপারে অবশ্য শুভেন্দুকে এখনও প্রকাশ্যে কিছু বলতে শোনা যায়নি।
রবিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির ভীমপুর এলাকায় পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে বেরিয়ে রোড শো করছিলেন শুভেন্দু। যার জেরে স্বাভাবিক ভাবেই বাস দাঁড়িয়ে পড়ে রাস্তায়। শুভেন্দু সামনাসামনি আসতেই বাসের জানলা দিয়ে মুখ বার করে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন শিলাদিত্য। বিরোধী দলনেতাও তাঁকে চিনতে দেরি করেননি। দু’জনকে হাত মেলাতে দেখা যায়। সামান্য কথাও বলেন তাঁরা।
পরে শিলাদিত্য জানান, তিনি বেলপাহাড়ি-মেদিনীপুর রুটে বাস কন্ডাক্টরের কাজ করেন। রবিবার তাঁর বাসটিও যানজটে আটকে পড়েছিল। শুভেন্দু রোড শো করছেন শুনেই উৎসুক হয়ে জানলা নিয়ে মুখ বাড়িয়ে ছিলেন। শিলাদিত্য বলেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে হাত মিলিয়েছি। ওইটুকু সময়ের মধ্যেই ওঁকে ২০১২ সালের মামলার বিষয়টি জানিয়েছি। সাহায্যও চেয়েছি। তবে উনি মাথা নেড়ে চলে গিয়েছেন। এর বেশি কথা হয়নি।’’
২০১২ সালের ৮ অগস্ট বেলপাহাড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর সভা চলাকালীন গলা চড়িয়ে কথা বলতে শোনা গিয়েছিল শিলাদিত্যকে। তাঁর আচরণে ‘ক্ষুব্ধ’ হন মমতা। বক্তৃতার মধ্যেই ‘মাওবাদীরা সভায় লোক ঢুকিয়েছে’ বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। শিলাদিত্যকে ‘ধরার’ নির্দেশও দেন। এর পরেই পুলিশ তাঁকে মঞ্চের পিছনে ধরে নিয়ে যায়। পরে পুলিশ দাবি করে, জেরা চলাকালীন ‘কড়া’ নিরাপত্তার বেষ্টনী গলে ‘পালিয়ে যান’ শিলাদিত্য। যদিও পরিবারের দাবি, মামুলি কিছু কথা জেনে পুলিশই ওই দিন শিলাদিত্যকে ছেড়ে দিয়েছিল। এর পরে বিনপুর থেকে শিলাদিত্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই গ্রেফতারিকে ‘আমজনতার গণতান্ত্রিক অধিকার খর্বের দৃষ্টান্ত’ বলে অভিযোগ তুলেছিল বাম, বিজেপি এবং সেই সময় তৃণমূলের জোট-সঙ্গী কংগ্রেস। ঘটনাচক্রে, সেই সময় তৃণমূলেই ছিলেন শুভেন্দু। পরে অবশ্য জামিন পান শিলাদিত্য। কিন্তু মামলাটি এখনও বিচারাধীন। এ বার সেই মামলায় সাহায্যের জন্যই শুভেন্দুকে অনুরোধ জানান শিলাদিত্য।