মা উড়ালপুলে দুর্ঘটনার (Accident in Maa Flyover) শিকার হয়েছিলেন তরুণী। শ্বাস পড়ছিল না, হয়তো মারাই যেতেন তত্ক্ষণাত্। ঘটনাচক্রে সেই সময়েই সেই জায়গা দিয়েই যাচ্ছিলেন এক চিকিত্সক। তখনই গাড়ি থেকে নেমে ওই তরুণীর শুশ্রূষা করেন তিনি। ঘটনাচক্রে, এগিয়ে আসেন সেখানে উপস্থিত আরও এক চিকিত্সক (2 Kolkata Doctors)।
তাঁদেরই চেষ্টায় প্রাণ বাঁচে তরুণীর (Saved Life)।
ফিটাল মেডিসিন স্পেশ্যালিস্ট ডক্টর কাঞ্চন মুখার্জী পরে নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন গোটা ঘটনা। এবং এই ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে তিনি জনসাধারণকে সচেতন করেন, সিপিআর বা কার্ডিও পালমোনারি রেসাসিটেশন অর্থাত্ আপত্কালীন পরিস্থিতিতে কৃত্রিম ভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস চালানোর পদ্ধতি- তা যেন সকলে শিখে রাখেন!
এদিন ডক্টর মুখার্জী লেখেন, সকাল সওয়া দশটা নাগাদ তিনি যাচ্ছিলেন মা ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে। সায়েন্স সিটির অভিমুখে ছুটছিল গাড়ি। আচমকা সামনে দুর্ঘটনা দেখে জোরে ব্রেক কষে গাড়ি। তিনি দেখেন, ২৫-৩০ বছরের এক তরুণী আহত হয়েছেন মোটরবাইক দুর্ঘটনায়।
এর পরে গাড়ি থেকে নেমেই পরীক্ষা করতে যান চিকিত্সক। তিনি লেখেন, ‘কাছে গিয়ে দেখি ভদ্রমহিলা আনরেসপনসিভ, পাল্স বা শ্বাস কোনওটাই নেই।’ সঙ্গে সঙ্গে তিনি রাস্তাতেই বসে যান বুকে চাপ দিয়ে সিপিআর দেওয়ার জন্য। এর মধ্যেই এগিয়ে আসেন আরও এক চিকিত্সক, যিনি ছিলেন ঘটনাস্থলেই। তিনি অ্যানাস্থেটিস্ট, ডক্টর অশোক বর্মা। তিনি আসার পরেই বুকে চাপ দিয়ে শ্বাস ফেরানোর চেষ্টার পাশাপাশি এয়ারওয়ে মেনটেন করার চেষ্টা শুরু হয়। কিছুক্ষণের চেষ্টায় পাল্স ফেরে ওই তরুণীর।
কিন্তু এখানেই শেষ নয়। তখনও অ্যাম্বুল্যান্স না আসায়, ডক্টর বর্মার গাড়ির সিটেই তরুণীকে শুইয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস চালু করার চেষ্টা করতে থাকেন ডক্টর মুখার্জী, এবং সেই গাড়ি চালাতে থাকেন ডক্টর বর্মা। কিছুক্ষণের মধ্যেই সল্টলেকের হাসপাতালে ভর্তি করা সম্ভব হয় ওই তরুণীকে।
তবে ডক্টর কাঞ্চন মুখার্জী জানিয়েছেন, তরুণীর সিটি স্ক্যান করে জানা গেছে মস্তিষ্কে রক্ত জমে গেছে তাঁর, হয়ে গেছে দু’বার কার্ডিয়াক অ্যারেস্টও। ফলে তরুণীকে অন্য হাসপাতালে সরিয়ে অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে।
ডক্টর মুখার্জী লিখেছেন, ‘যেটুকু যা চিকিত্সা হচ্ছে, সেটাও করা যেত না, যদি না আমরা তত্ক্ষণাত্ ঝাঁপিয়ে পড়তাম। এখন ভাল থাকলেই ভাল। যে সমস্ত নন্-মেডিকো বন্ধু আছেন প্রত্যেককে অনুরোধ, বেসিক সিআরপি-টা শিখে রাখুন।’