স্ট্রেচারে শুয়েই কর্তব্যরত নার্সের শ্লীলতাহানি রোগীর! বীরভূমের হাসপাতালে উত্তেজনা, ধৃত অভিযুক্ত

বীরভূমের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্তব্যরত নার্সের শ্লীলতাহানির অভিযোগ রোগীর বিরুদ্ধে। অসুস্থ যুবককে স্ট্রেচারে শুইয়ে হাতে চ্যানেল করতে গিয়েছিলেন নার্স। অভিযোগ, সেই সময়ে তাঁর শ্লীলতাহানি করা হয়। রোগী নার্সের দেহ স্পর্শ করেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনার পর রাতে উত্তেজনা ছড়িয়েছে বীরভূমের ইলামবাজারের ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ডাকে রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে তাঁর উপযুক্ত শাস্তি এবং হাসপাতালে নিরাপত্তার দাবিতে রবিবার সকালে স্থানীয় থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান স্বাস্থ্যকর্মীরা। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ২৪ ঘণ্টা পুলিশি নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

শনিবার রাতে শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে ইলামবাজার ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন এক যুবক। সঙ্গে তাঁর পরিবারের লোকজনও ছিলেন। জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাঁকে। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো নার্স গিয়েছিলেন যুবকের স্যালাইনের বন্দোবস্ত করতে। সেই সময়েই শ্লীলতাহানি করা হয় বলে অভিযোগ। রাতেই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন কর্তব্যরত ওই নার্স।

অভিযোগকারী সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘রাতে এক জন রোগী এসেছিলেন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আমি তাঁকে স্যালাইন দিতে গিয়েছিলাম। ওঁর হাতে চ্যানেল করার সময় রোগী আমার গায়ে হাত দেন। গালিগালাজও করছিলেন। আমি এখানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। একজন রোগী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসে কী ভাবে এই সাহস পান? ওঁর বাড়ির লোকজনও সামনে ছিলেন। সকলে দেখেছেন কী ঘটেছে।’’ রাতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নিরাপত্তার বিষয়ে ওই নার্স বলেন, ‘‘এখানে সকাল বা রাত, কখনওই কোনও পুলিশ থাকে না। তবে এই ঘটনার পরে আমরা থানায় খবর দেওয়ার পর পুলিশ এসেছিল। আমি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। রোগীকে পুলিশ নিয়ে গিয়েছে।’’

ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘‘রোগীকে স্যালাইন দেওয়ার সময় এক জন সহকারীকে সামনে থাকতে হয়। আমি তাই নার্সের সঙ্গে ছিলাম। আমার চোখের সামনেই ঘটনাটি ঘটেছে। দিদি স্যালাইনের জন্য রোগীর হাতে চ্যানেল করতে গিয়েছিলেন। রোগী তখন তাঁর শ্লীলতাহানি করে। আমরা সকলে দেখেছি। দিদি কাঁদতে কাঁদতে সেখান থেকে সরে যান। আমরা সকলে ঘটনার প্রতিবাদ করি। পুলিশকেও জানানোর সঙ্গে সঙ্গে তারা আসে। তবে রাতে মহিলারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।’’

আরজি কর-কাণ্ডে যখন সারা রাজ্য তোলপাড়, তার মাঝেই বীরভূমের হাসপাতালের এই ঘটনা আবার স্বাস্থ্যকর্মী এবং চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে গত ৯ অগস্ট এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুন করা হয় বলে অভিযোগ। সেই ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। বিচারের দাবিতে এবং সমস্ত সরকারি হাসপাতালে উপযুক্ত নিরাপত্তার দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। তার পরেও ছবিটা বদলায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.