‘নিম্নচাপ’ কেটে গড়িয়াহাট, নিউ মার্কেটে ঝলমলে ভিড়! কেনাকাটায় গিয়েও কারও কারও মাথায় ‘বিচার চাই’

পুজোর কেনাকাটা শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে উৎসবের ছন্দে ফিরছে মানুষ! কলকাতার বিভিন্ন বাজার এলাকায় বা শপিং মলে ফিরছে চেনা ভিড়। রবিবার ছুটির দিনে উত্তর কলকাতার হাতিবাগান হোক বা দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়াহাট বা নিউমার্কেট এলাকায় কেনাকাটায় ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। অনেকে উৎসবে যোগ দিলেও আরজি কর কাণ্ডের কথা ভুলে যাননি। সেখানেও অনেকে প্রতিবাদের কথা বলছেন। কেউ বলছেন ‘বিচার চাই, বিচার হবেই’।

আরজি কর কাণ্ডের প্রভাব বাঙালির দুর্গাপুজোর মধ্যেও পড়েছে। পুজোর এক মাস আগেও শহর যেন স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে পারেনি। নানা জায়গায় প্রতিবাদ, বিক্ষোভ চলছেই। গত ১৭ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানি হওয়ার পরে ওই পরিস্থিতির কিছুটা বদল ঘটেছে। জরুরি পরিষেবার কাজে যোগ দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। অনেকে পুজোর কেনাকাটা শুরু করেছেন। রবিবারের ভিড় সেই কথায় বলছে। কলকাতার নানা এলাকায় সাধারণ মানুষকে কেনাকাটা করতে দেখা গিয়েছে। তবে অন্য বারের থেকে ভিড় কম বলে করছেন নিউ মার্কেটের দোকানদার মহম্মদ ইরফান। ওই এলাকায় তাঁর মহিলাদের সাজ সরঞ্জামের দোকান রয়েছে। মহম্মদের কথায়,‘‘আরজি কর কাণ্ড মানুষকে নাড়িয়ে দিয়েছে। বাড়ির মেয়েদের লোকে এখন একা ছাড়তে ভয় পায়। গত বছরের সঙ্গে ভিড়ের তুলনা হয় না। বেচাকেনা হচ্ছে তবে খুব বেশি নয়।’’

নিউ মার্কেট চত্বরে পুজোর কেনাকাটা করতে ভিড় সাধারণ মানুষের।

ওই এলাকার জুতোর দোকানদার মহম্মদ পাপু বলছেন, পুজোর কেনাকাটার ভিড় বাড়ছে। আজ ভিড় অনেকটাই হয়েছে। তবে অত্যধিক নয়। আশা করছি পরবর্তী ছুটির দিনগুলোতে ভিড় আরও বাড়বে। হাতিবাগানের জামাকাপড় বিক্রেতা তাপস সেন বলেন, ‘‘এই বাজারে আরজি কর কাণ্ডের প্রভাব অনেকটাই পড়েছে। কেনাকাটার চাহিদা কম। ওই ঘটনার পর থেকে শ্যামবাজার এলাকায় পুলিশি নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি হওয়ায় অনেকে এখানে আসছেন না। অন্য বাজারে চলে যাচ্ছেন।’’ কেনাকাটা করতে এসে বিচারের দাবি জানান আহিরিটোলার বাসিন্দা সৌরভ মুখোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘উৎসবে শামিল হয়েছি বলেই ওই ঘটনা আমরা ভুলিনি। এই উৎসব সাময়িক। কিন্তু আমরা বিচার চাই। আশা রাখছি বিচার হবেই। না হলে আবার পথে নামব।’’

পছন্দের পোশাক বাছতে ব্যস্ত মানুষ।

অনেকে আবার মনে করছেন, বিগত বছরগুলিতে এই সময় কেনাকেটা যে একেবারে তুঙ্গে উঠে যায় এমনটা নয়। গড়িয়াহাটের একটি শপিং মলে কর্মরত অমিতকুমার মল্লিকের কথায়, ‘‘ভিড় কম না বেশি তা এখনই বলার সময় আসেনি। কারণ, সামনে আরও দুটো শনি ও রবিবার রয়েছে। গান্ধী জয়ন্তী রয়েছে। ছুটির ওই দিনগুলিতে প্রবল ভিড় হয়। এ বার কেমন হয় তা দেখার। তবে মানুষ বেরিয়ে কেনাকাটা শুরু করেছেন এটা সত্যি।’’ আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসক খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এখনও বিক্ষোভ চলছে। ওই ঘটনার প্রতিবাদে প্রতি দিনই কোথাও না কোথাও রাস্তায় নামছেন সাধারণ মানুষ। তবে তারই পাশাপাশি পুজোর আমেজে ফিরছেন অনেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.