দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করল আবহাওয়া দফতর। বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের ভ্রুকুটির মাঝেই জ্বালাপোড়া গরমে পুড়বে বাংলার অধিকাংশ জেলা। কলকাতাতেও তাপপ্রবাহের মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে আগামী দু’দিন।
আলিপুর হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় তাপপ্রবাহ হতে পারে। বুধ এবং বৃহস্পতিবার তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়ায়। শুক্রবার তাপপ্রবাহ হতে পারে বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়ার মতো কয়েকটি জেলায়।
কলকাতায় তাপপ্রবাহ না হলেও তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে। ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকতে চলেছে শহরের তাপমাত্রা।
দক্ষিণবঙ্গে তাপপ্রবাহের রেশ কাটিয়ে ঝড়বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে আবার রবিবার। আগামী ১৪ মে ঘূর্ণিঝড় মোকার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তা বিক্ষিপ্ত ভাবে। পশ্চিমবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতে আপাতত বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই। বরং তাপমাত্রার পারদ আরও চড়বে।
বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ ইতিমধ্যে অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় তা থেকে জন্ম নিতে চলেছে ঘূর্ণিঝড় মোকা। তা ক্রমশ উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে। তার পর বাঁক নিয়ে মায়ানমার এবং বাংলাদেশ উপকূলের দিকে চলে যাবে এই ঘূর্ণিঝড়। কবে কোথায় তা আছড়ে পড়বে, এখনও স্পষ্ট করে জানায়নি হাওয়া অফিস।
আবহবিদদের মতে, ঘূর্ণিঝড় মোকার কারণেই রাজ্য থেকে জলীয় বাষ্প বঙ্গোপসাগরের দিকে চলে যাচ্ছে। মোকাই শুষে নিচ্ছে জলীয় বাষ্প। তা ছাড়া, উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে শুষ্ক, গরম বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। তার ফলেই বাংলায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী কয়েক দিন তাপপ্রবাহের পরিস্থিতির জন্যও দায়ী এই শুষ্ক বাতাস।
মোকার কারণে বাংলার উপকূলে মৎস্যজীবীদের জন্য সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস। গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করা হয়েছে তাঁদের। শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত সমুদ্রের গভীরে যাওয়ার ক্ষেত্রে মৎস্যজীবীদের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আলিপুর। যাঁরা মাছ ধরতে গিয়েছে, শুক্রবারের মধ্যে তাঁদেরও স্থলভাগে ফিরে আসতে বলা হয়েছে।