বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল বাবা-মা এবং কিশোরী মেয়ের। রবিবার সন্ধ্যায় দক্ষিণেশ্বরের দিক থেকে স্কুটারে করে এয়ারপোর্টের দিকে যাচ্ছিল ওই পরিবার। ঠিক সেই সময়ে পিছন দিক থেকে একটি লরি এসে সজোরে স্কুটারে ধাক্কা মারে। মুহূর্তে লরির চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় তিন জনের। কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে ঘাতক লরিটিকেও।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, রবিবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে ধরে স্কুটারে চেপে এয়ারপোর্টের দিকে যাচ্ছিলেন বাবা-মা ও মেয়ে। তখনই এয়ারপোর্টের ৩ নম্বর গেটের কাছে দুর্ঘটনাটি ঘটে। পিছন দিক থেকে দ্রুতগতিতে আসা একটি লরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সজোরে ধাক্কা মারে তাঁদের স্কুটারে। তিন জনই লরির চাকার তলায় পিষ্ট হয়ে যান। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় আহতদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় বারাসত মেডিক্যাল কলেজে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। সেখানে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তিন জনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন। ইতিমধ্যেই ঘাতক লরিটিকে আটক করেছে পুলিশ। মৃতদের দেহগুলি বারাসত হাসপাতালেই ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সমীরবরণ সাহা বলছেন, ‘‘সাড়ে ৭টা নাগাদ এয়ারপোর্টের সিটি হোটেলের সামনে ঘটনাটি ঘটেছে। এই জায়গাটা এমনিতেই দুর্ঘটনাপ্রবণ। এখানে স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ব্যবস্থা রয়েছে। নামেই সিগন্যাল, তা অনেক সময়েই কাজ করে না। এ ছাড়া, এই এলাকায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থাও নেই। তাই প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটছে।’’ সমীরবরণের আক্ষেপ, ‘‘যদি পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকত এবং সিগন্যালের সমস্যা মেটানো যেত, তা হলে এই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত!’’
প্রাথমিক ভাবে প্রত্যক্ষদর্শীরাই জানান, মৃত তিন জন বিশরপাড়ার বাসিন্দা। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন মৃতদের পরিবারের সদস্যেরা। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের নাম জয়দীপ দাশগুপ্ত, দীপা দাশগুপ্ত এবং সৃজনী দাশগুপ্ত। জয়দীপের দাদা অভিজিৎ দাশগুপ্ত জানাচ্ছেন, বছর ১৪-র সৃজনী নবম শ্রেণিতে পড়ত। বিরাটির দুর্গানগর ব্রিজের কাছে থাকত ওই পরিবার। অন্য দিকে, রবিবার সন্ধ্যার এই দুর্ঘটনার জেরে বেশ কিছু ক্ষণের জন্য বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে যানজটের সৃষ্টি হয় এলাকায়। তবে দেহ উদ্ধারের পর যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।